ক্যাম্পাস

জাবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন শনিবার

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শিক্ষক সমিতির ২০১৬ সালের নির্বাহী পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে শনিবার। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ক্লাবে সকাল ৯টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনে ১৫টি পদের বিপরীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই প্যানেল থেকে ৩০ জন শিক্ষক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।এবারের নির্বাচনে আওয়ামী পন্থী শিক্ষকরা ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ প্যানেলে এবং বিএনপি পন্থী শিক্ষকরা ‘বহুদলীয় গণতন্ত্র, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী শিক্ষক’ প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে বামপন্থী শিক্ষকরা এবারের শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না।এদিকে এ বছর শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে সর্বমোট ৫০৬ জন শিক্ষক তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে।আওয়ামী পন্থী ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ প্যানেলে তিন শতাধিক শিক্ষক থাকায় এটি সবচেয়ে বড় গ্রুপ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। অন্যদিকে বিএনপি পন্থী শিক্ষকদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামে রয়েছেন মাত্র ৯১ জন। ভোটার সংখ্যা বিবেচনায় এবারের নির্বাচনে আওয়ামী পন্থী শিক্ষকরা একচেটিয়া জয়ের কথা ভাবছেন।এর আগে গত দুই নির্বাচনে আওয়ামী ও বিএনপি পন্থী শিক্ষকরা নির্বাচনে শিক্ষক সমিতির বিভিন্ন পদ ভাগাভাগি করে নেয়। ২০১৪ সালে সাবেক উপাচার্য আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বড় দুটি রাজনৈতিক দলের সমর্থনপুষ্ট শিক্ষকরা জোটবদ্ধ হয়ে শিক্ষক সমিতির ১৫টি পদ ভাগ করে নিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের শিক্ষক সমিতির নির্বাচনেও ‘ভাগাভাগিতে’ আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের প্যানেল থেকে আসে ৯টি এবং বিএনপি পন্থী শিক্ষকদের প্যানেল থেকে আসে ছয়টি পদ। কিন্তু পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের সঙ্গে বিএনপি পন্থী শিক্ষকদের সর্ম্পকের টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়। শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী পন্থী প্যালেন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তারা হলেন- অধ্যাপক ড. অজিত কুমার মজুমদার (সভাপতি),  সহযোগী অধ্যাপক বশির আহমেদ (সাধারণ সম্পাদক), অধ্যাপক ড. আবদুস ছালাম (সহ-সভাপতি), অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার (কোষাধ্যক্ষ), সহকারী অধ্যাপক হোসনে আরা বেবী (যুগ্ম-সম্পাদক)। আওয়ামী পন্থী প্যালেন থেকে সদস্য পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, অধ্যাপক শেখ মনজুরুল হক, অধ্যাপক ড. খবির উদ্দিন, অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমেদ, অধ্যাপক ড. অসিত বরন পাল, অধ্যাপক ড. কৌশিক সাহা, অধ্যাপক ড. খালেদ হোসাইন, অধ্যাপক ড. শাহেদুর রশিদ, সহযোগী অধ্যাপক ড. আনোয়ার খসরু পারভেজ, সহকারী অধ্যাপক  মো. ওয়াহিদুজ্জামান, প্রভাষক মো. রবিউল ইসলাম। নির্বাচনে বহুদলীয় গণতন্ত্র, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী শিক্ষকদের প্যালেন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তারা হলেন ড. মো. শামছুল আলম (সভাপতি),  ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান (সাধারণ সম্পাদক), ড. ফিরোজা হোসেন (সহ-সভাপতি), ড. মোহাম্মদ মামুন হোসেন (কোষাধ্যক্ষ), ড. মো. নজরুল হোসেন (যুগ্ম-সম্পাদক)।এই প্যালেন থেকে সদস্য পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ড. আবেদা সুলতানা, ড. এ. কে. এম. রাশিদুল আলম, মাসুশ শাহরিয়ার, ড. মাহবুব কবির, ড. মুহম্মদ নজরুল ইসলাম, মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, মো. জামাল উদ্দিন, ড. মো. নূরুল ইসলাম, ড. মো. মঞ্জুর ইলাহী, ড. শামীমা সুলতানা।এদিকে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে অংশ না নেয়ার বিষয়ে বামপন্থী প্রভাবশালী শিক্ষক অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসাইন বলেন, ‘শিক্ষক সমিতি শিক্ষকদের দাবি আদায়ের প্লাটফর্ম হিসেবে কার্যকারীতা হারিয়েছে। এর বাইরে থেকেও অনেক কাজ করা যায়।’জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শামছুল আলম বলেন, ‘প্রশসন নয়, শিক্ষক বান্ধব ও ভারসাম্যপূর্ণ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে আমরা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি।’বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আমির হোসেন বলেন, ‘নির্বাচনে আওয়ামী পন্থী শিক্ষকরা বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে। দল মত নির্বিশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক মুুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির পক্ষে রায় দেবে বলে আমরা আশা করছি।’ আর বামপন্থী ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক মতিন গ্রুপসহ শিক্ষক রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয় এমন শিক্ষকদের সংখ্যা শতাধিক। সবমিলিয়ে এবারের নির্বাচনে আওয়ামী পন্থী শিক্ষকরা বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যাচ্ছেন বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকরাও।  হাফিজুর রহমান/এসকেডি/পিআর

Advertisement