ভ্রমণ

যে দেশে নারীরাই বিয়ে করেন নারীকে!

বিয়ের মাধ্যমে নারী-পুরুষ এক পবিত্র বন্ধনে জড়ান। তবে এখন শুধু বিয়ে নারী-পুরুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। একজন পুরুষ চাইলে অন্য পুরুষকে বিয়ে করছেন, আবার ঠিক একই ঘটনা ঘটছে নারীদের ক্ষেত্রেও। যাকে সমকামী বিবাহ বলে জানেন সবাই।

Advertisement

এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সমকামিতা বৈধতা পেয়েছে। যার মধ্যে আছে আফগানিস্তান, ব্রুনাই, নেদারল্যান্ড, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, লুক্সেবুর্গ, আয়ারল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে সমকামিতাকে বৈধতা পেয়েছে।

ঠিক একইভাবে পূর্ব আফ্রিকার বনাঞ্চলীয় স্থান তানজানিয়ার রীতি অনুসারে নারী বিয়ে করেন নারীকে। আফ্রিকার বনাঞ্চলের একটি বড় অংশই আছে তানজানিয়াতে।

এমনকি আফ্রিকার সবচেয়ে উঁচু পর্বতও তানাজানিয়াতেই অবস্থিত। এছাড়া মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো, পেমবা আইল্যান্ড, তারানজিরে ন্যাশনাল পার্ক প্রভৃতি স্থানও পর্যটনের জন্য বিশ্ব পরিচিতি পেয়েছে। দোদোমা হলো তানজানিয়ার রাজধানী।

Advertisement

সে দেশের কুরিয়া উপজাতিদের মধ্যে সমকামিতা এক আদিম রীতি। নারীর সঙ্গে নারীর বিয়ে সেখানে মোটেও কোনো অপরাধ নয়। সমকামের বিয়েতে সামাজিক স্বীকৃতিও মেলে সেখানে।

তানজানিয়ার মানুষের কাছে সমকামের বিয়েকে বলা হয়, ‘হাউস অব ওমেন’। স্বামীর অবর্তমানে নারীরা নিজের জীবনকে উপভোগ করেন এই রীতির মাধ্যমেই।

তবে এই বিয়ের অনুমতি তখনই দেওয়া হয় যখন কোনো নারী বিধবা হন বা স্বামী তাকে ছেড়ে যান। এক্ষেত্রে নারীরা বেশিরভাগ সময়ই তার চেয়ে কমবয়সী নারীকে বিয়ে করেন।

পরে আবার ওই নারী চাইলেই অন্য পুরুষকে বিয়ে করতে পারেন। সেক্ষেত্রে ওই পুরুষেরও দায়িত্ব পড়ে নিজের স্ত্রীসহ তার বিয়ে হওয়া নারীর দেখভাল করার।

Advertisement

তবে এমন বিয়েতে এক নারী কখনো অন্য নারীর সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হন না। বিধবা কিংবা সন্তান নেই এমন নারীরাও চাইলে ছোট বয়সী যে কোনো নারীকেই বিয়ে করতে পারেন।

এমনকি চাইলে নারীরা তাদের চেয়ে বয়সে ছোট পুরুষকেও বিয়ে করতে পারেন। এটি একটি আদি রীতি যা এখনো মেনে চলছে তানজানিয়ার মানুষ।

আসলে সেখানে নারী নির্যাতনের হার অনেক বেশি। ২০১৩ সালে দেশটির স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের করা এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১৫-৪৯ বছর বয়সী ৪৫ শতাংশ নারী স্বামীর দ্বার যৌন বা শারীরিক সহিংসতার সম্মুখীন হন।

এ কারণেই পুরুষদের প্রতি ঘৃণাবোধ করেন সেখানকার অধিকাংশ নির্যাতিত নারীরা। তেমনই এক নারী হলেন আনাস্তাসিয়া জুমা। তিনি বলেন, ‘আমার ১৩ বছর বয়সে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামী আমার সঙ্গে দাসীর মতো আচরণ করতেন। এরপর আমাকে ছেড়েও দেন।’

এরপরই রীতি অনুসারে আনাস্তাসিয়া জুমা বিয়ে করেন মুগোসি মানিঙ্গো নামের এক নারীবে। মুগোসি বলেন ‘কেউ চাইলেই আমাদেরকে স্পর্শ করতে পারবে না।’

‘যদি কোনো পুরুষ আমাদের সম্পত্তি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে বা আমাদেরকে আঘাত করেন তাহলে উপজাতি প্রধান দ্বারা তারা শাস্তিপ্রাপ্ত হবেন।’

তানজানিয়াবাসী কৃষিকাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। সেখানকার বেশিরভাগ নারীরাই জমিতে ভুট্টা, বাজরা, গম এবং সবজি চাষ করেন ও গরু, ছাগল এবং মুরগি পালন করেন।

সূত্র: ইন্ডিপেন্ডেন্ট.ইউকে

জেএমএস/এমএস