ধর্ম

হজের সামর্থ না থাকলে কী করবেন?

হজ ইসলামের পঞ্চম রোকন ও  অন্যতম ফরজ ইবাদত। তবে হজ ফরজ ইবাদত হলেও মহান আল্লাহ তাআলা তা সবার ওপর ফরজ করেননি। যাদের শারীরিক ও আর্থিক সামর্থ আছে শুধু তাদের ওপরই হজ ফরজ করা হয়েছে। কিন্তু যাদের হজের সামর্থ নেই, তাদের জন্য রয়েছে বিশেষ আমল। কী সেই আমল?

Advertisement

১. জামাতে নামাজ পড়া

হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে ফরজ নামাজ আদায় করলো সে যেন হজ করে এলো। আর যে ব্যক্তি নফল নামাজ আদায় করতে মসজিদে গমন করলো সে যেন ওমরাহ করে এলো। (তাবারানি)

২. ইশরাকের নামাজ পড়া

Advertisement

ফজরের নামাজ আদায়ের পর মসজিদে সূর্য ওঠা পর্যন্ত অবস্থান করা। হজরত আনাস ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করলো, তারপর সূর্যোদয় পর্যন্ত মসজিদে বসে আল্লাহর জিকির করলো, এরপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করলো, সে ব্যক্তি হজ ও ওমরার সওয়াব নিয়ে ফিরলো। (তিরমিজি)

৩. দ্বীন শেখার নিয়তে মসজিদে যাওয়া

হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি মসজিদে গেলো কোনো ভালো কথা শেখা বা শেখানোর উদ্দেশ্যে, সে পরিপূর্ণরূপে হজ আদায়কারী একজন ব্যক্তির ন্যায় সওয়াব পাবে। (তাবারানি)

৪. রমজানে ওমরাহ করা

Advertisement

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘রমজানে ওমরাহ আদায় করলে আমার সঙ্গে হজ আদায়ের সমপরিমাণ সওয়াব পাবে।’ (বুখারি, মুসলিম)

৫. মসজিদে কুবায় নামাজ পড়া

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি নিজ ঘরে পবিত্রতা অর্জন করলো, এরপর মসজিদে কুবায় এসে কোনো নামাজ আদায় করলো, সে ওমরার সওয়াব অর্জন করলো।’ (ইবনে মাজাহ)

৬. বাবা-মায়ের সেবা করা

হজরত আনাস ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললো, আমি জিহাদে অংশগ্রহণ করতে চাই, কিন্তু আমার সেই সামর্থ ও সক্ষমতা নেই। নবিজী প্রশ্ন করলেন, তোমার বাবা-মা কেউ কি জীবিত আছেন?

লোকটি বলল, আমার মা জীবিত। উত্তরে নবিজী বললেন, তাহলে মায়ের সেবা করে আল্লাহর কাছে জিহাদে যেতে না পারার অপারগতা বা ওজর পেশ কর। এভাবে যদি করতে পার এবং তোমার মা সন্তুষ্ট থাকেন তবে তুমি হজ, ওমরাহ এবং জিহাদের সওয়াব পেয়ে যাবে। সুতরাং আল্লাহকে ভয় কর এবং মায়ের সেবা কর।’ (মাজমাউয যাওয়াইদ)

সুতরাং যারা হজ করার সামর্থ রাখে না তাদের উচিত, উল্লেখিত আমলগুলো নিয়মিত বেশি বেশি আদায় করা। যার মাধ্যমে নবিজীর ঘোষণা অনুযায়ী তারা পাবেন হজ ও ওমরা করার সওয়াব।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সবাইকে হজ ও ওমরা করার তাওফিক দান করুন। সামর্থ না থাকলে উল্লেখিত আমলগুলো নিয়মিত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এএসএম