দেশজুড়ে

মেয়েকে জমি দেওয়ায় মাকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠালেন ছেলে

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে মেয়েকে জমির অংশ দেওয়ায় ছেলের নির্যাতনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মা। আর ছেলের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বাবা।

Advertisement

স্ত্রী জহুরা বেগম (৬০) হাসপাতালের বেডে যন্ত্রণায় কাতরালেও কাছে যেতে পারছেন না স্বামী তইজ উদ্দিন (৬৫)। ছেলের ভয়ে তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

হৃদয় বিদারক এই ঘটনা ঘটেছে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার ৫নং খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের কিসমত লালপুর গ্রামে। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সকালে ছেলের হাতে নির্যাতিত মা জহুরা বেগম ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন।

হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন জহুরা বেগম বলেন, সম্প্রতি বাড়ির ভিটাসহ ১৫৯ শতক জমি তার তিন ছেলে ও এক মেয়ের নামে লিখে দিয়েছেন। মেয়ের নামে জমি লিখে দেওয়ায় সেইদিন থেকে তিন ছেলের মধ্যে একজন নবীউল ইসলাম বিভিন্ন সময় তাদের ওপর অত্যাচার করে আসছেন। এ নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান কয়েক দফা সালিশ করে দিয়েছেন।

Advertisement

কেন বারবার চেয়ারম্যানকে জানানো হয় সে কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে বুধবার (২৯ জুন) বিকেলে বাড়িঘরে ভাঙচুর চালান নবীউল। বাধা দিতে গেলে বাবা তইজ উদ্দিন ও তাকে (জহুরা বেগম) শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন তিনি। এই ঘটনা বুধবার রাতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানানো হলে বৃহস্পতিবার সকালে ছেলে নবীউল ইসলাম তাকে মারপিট করে গুরুতর আহত করেন।

ভুক্তভোগীর স্বামী তইজ উদ্দিন বলেন, তিনি বাড়িতে যেতে পারছেন না ছেলের ভয়ে। হাসপাতালেও ঠিকমতো থাকতে পারছেন না। আমাকে পেলেও আমার স্ত্রীর মতো মারপিট করবে। তাই ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। আমি ছেলের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করব।

অভিযুক্ত ছেলে নবীউল ইসলামের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাবা-মা যেহেতু তাদের মেয়েকে জমি দিয়েছে সেহেতু মেয়ের কাছে চলে যেতে হবে। এই বাড়িতে তাদের থাকার অধিকার নেই।

খয়েরবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক বলেন, কয়েক দফা বিচার করেও বিষয়টি সমাধান করা যায়নি। বিচার করার পরেও নবীউল ইসলাম ও তার ভাইয়েরা বাড়িতে গিয়ে আবারো তাদের বাবা-মার ওপর অত্যাচার করে।

Advertisement

নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালের ভর্তি জহুরা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, এই ঘটনার জন্য আমি আমার ছেলের বিচার চাই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দীন বলেন, বিষয়টি জেনেছি। স্থানীয় চেয়ারম্যান এবং পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এমদাদুল হক মিলন/এফএ/এমএস