রাজনীতি

সরকারের অবহেলায় করোনা সংক্রমণ বাড়ছে: মোশাররফ

সরকারের অবহেলার কারণে দেশে চতুর্থবারের মতো করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

Advertisement

তিনি বলেন, কয়েক মাস আগে চীনে সংক্রমণ বাড়লেও বাংলাদেশ সরকার এতে কোনো গুরুত্ব দেয়নি। এখন আবার সংক্রমণ বাড়ছে। আমাদের অনেক নেতা আক্রান্ত। এখানেও সরকারের ব্যর্থতা এবং অসাবধানতা।

শুক্রবার (১ জুলাই) নয়াপটনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় আয়োজিত দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সব নেতার সুস্থতা ও ভয়াবহ বন্যা থেকে বানভাসিদের পরিত্রাণ কামনায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি এ দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে।

Advertisement

খন্দকার মোশাররফ বলেন, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী গণতন্ত্রের মা আজকে একটি বানোয়াট মামলায় ফরমায়েশি রায়ে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত। বর্তমানে প্রশাসনিক অর্ডারে সাময়িকভাবে মুক্ত থাকলেও তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। কিছুদিন আগে তার অস্ত্রোপচার হয়েছে। তিনি অত্যন্ত খারাপ অবস্থার মধ্যে দিন পার করছেন।

তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিবসহ বিভিন্ন স্তরের নেতারা করোনাসহ অন্যান্য রোগে অসুস্থ। আমরা আজ তাদের সুস্থতায় আল্লাহর কাছে প্রার্থনার জন্য এখানে সম্পৃক্ত হয়েছি।

মোশাররফ বলেন, আমাদের নেত্রী আজ কেন অসুস্থ? কারণ, তাকে নির্জন কারাগারে রাখা হয়েছিল যেখানে কোনো মানুষ ছিল না। এমন একাকীত্ব অস্বাভাবিক পরিবেশে তাকে রাখা হয়েছিল। যে নেত্রী পায়ে হেঁটে গাড়িতে উঠে কারাগারে গিয়েছিলেন তিনিই সাময়িক মুক্তি পেয়ে সম্পূর্ণ অসুস্থ অবস্থায় বাসায় ফিরেন। অর্থাৎ, দেশনেত্রীকে কারাগারে রেখে তিলে তিলে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, চিকিৎসকেরা বারবার বলছেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসাসেবা দিতে। বাংলাদেশে তার আর চিকিৎসা নেই। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো প্রয়োজন। কিন্তু সরকার কোনো কর্ণপাত করছে না।

Advertisement

বিএনপির এ নীতি নির্ধারক বলেন, আজকে বিএনপি নেতাকর্মীসহ সবারি দাবি, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হোক। কিন্তু সরকারের তাকে পাঠানোর প্রয়োজন নেই। খালেদা জিয়া নিজেই চিকিৎসার জন্য যাবেন। তার সাময়িক মুক্তিতে যে শর্ত দেওয়া হয়েছে তা প্রত্যাহার করা হোক। তবে সরকার সে শর্ত প্রত্যাহার করবে না।

তিনি বলেন, সরকার খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে চায়। সেজন্যই সরকার শর্ত তুলে নেবে না এবং বিদেশে গিয়ে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেবে না। কেননা সরকার খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ গোটা বিএনপিকে দাবিয়ে রেখে ক্ষমতায় বলবৎ থাকতে চায়।

বন্যার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, সিলেট বিভাগে আবার পানি বাড়ছে। এ পানিগুলো কোথা থেকে আসছে? আমাদের উপরের দেশ (ভারত) থেকে পানি আসছে। ফারাক্কাসহ ৫৪টি বাঁধ দেওয়া রয়েছে। বর্ষাকালে যখন অতিবৃষ্টি হয় তখন ভারত নিজেদের স্বার্থে সব গেট একসঙ্গে খুলে দেয়। তখনই বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। অথচ দেশে শুষ্ক মৌসুমে পানি কম থাকার কারণে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে।

মোশাররফ বলেন, হঠাৎ করে পানি এলে তা ধারণ বা সরার জায়গা পায় না। এ কারণেই বাংলাদেশে এত বন্যা হচ্ছে। যখন আমাদের পানির প্রয়োজন নেই তখন বন্যায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়। যখন পানির প্রয়োজন হয় তখন পানি না দেওয়ার কারণে নদীগুলো মরা নদীতে পরিণত হচ্ছে। আমাদের জীব-বৈচিত্র্য কৃষি দৃঢ়ভাবে বিপর্যস্ত এবং ভবিষ্যতে তা আরও বিপর্যস্ত হতে পারে।

সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে এমনটা হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, এ কারণেই রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো যাচ্ছে না।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু ও ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু প্রমুখ।

কেএইচ/এমকেআর/এমএস