মুখে কোনো কথা না বলে শুধু অঙ্গভঙ্গি দিয়েই বিশ্ববাসীর হাসির কারণ হয়েছিলেন চার্লি চ্যাপলিন। তাকে কে না চেনেন। মৃত্যুর এত বছর পরেও একই রকম জনপ্রিয়তা আছে তার। তবে নিছক ঠাট্টা করে চার্লি চ্যাপলিনের সঙ্গে অনেকেই তুলনা করেছেন খাবি লেমকে।
Advertisement
খাবি লেমকে চেনেন না অথচ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। খাবির জনপ্রিয়তা এখন বিশ্বজুড়েই। এমনকি গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসেও মিলেছে স্বীকৃতি। টিকটক অ্যাপে সবচেয়ে বেশি ফলোয়ার এখন খাবির।
বর্তমানে টিকটকে খাবি লেমের অনুসারীর সংখ্যা ২০ কোটি। যা ছাড়িয়ে গেছে চার্লি ডি'আমেলিওকেও। টিকটক অ্যাপে সবচেয়ে বেশি অনুসারীর সংখ্যা ছিল ১৮ বছর বয়সী চার্লি ডি'আমেলিওর। চার্লির দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে টিকটকে সবচেয়ে বেশি ফলোয়ার ছিল। তবে এই রেকর্ড এবার ভাঙলেন খাবি।
খোসা না ছাড়িয়েও কলা খাওয়া যায়, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি দিয়ে কলা কেটে নানা জটিল পদ্ধতিতে কলার সাদা অংশের খোঁজ অবশেষে মেলে এ রকম প্রচুর ‘লাইফ হ্যাকস’-এর ভিডিও নেটমাধ্যম ভর্তি। এ সব ভিডিওতে খুব সহজ কাজ জটিল পদ্ধতিতে করা হয়। কিন্তু এই কাজগুলোই যদি সাধারণভাবে করা যায়?
Advertisement
মহামারির একেবারে শুরুতে ঘরে বসে যখন মানুষ বিরক্ত হচ্ছে। সেই সময় খাবি জটিল ‘লাইফ হ্যাকস’-এর ভিডিওগুলো খুব সহজ ও সাধারণ পদ্ধতিতে করে দেখাতে শুরু করেন। কোনো কথা না বলে শুধু মুখভঙ্গিমার মাধ্যমে তিনি এমন মজার ভিডিও বানিয়েই টিকটকে নিজের পরিচিতি বানিয়ে ফেলেন।
কখনো ঘরের ভেতর, কখনো বাড়ির রান্নাঘরে, কখনো বা ডাইনিং রুমে মজার ভিডিও বানিয়ে সবার মুখে হাসি ফুটিয়ে চলেছেন বিখ্যাত টিকটকার খাবি লেম। চার্লি দি’অ্যামেলিও, যার টিকটকে অনুরাগীর সংখ্যা সর্বোচ্চ, তাকেও সম্প্রতি ছাপিয়ে গিয়েছেন খাবি। তার প্রতিটি ভিডিও হাস্যরসে পরিপূর্ণ হলেও তার ব্যক্তিগত জীবনে জটিলতা ছিল প্রচুর।
এক বছর বয়সেই সেনেগাল থেকে পরিবারসহ ইতালিতে চলে আসেন তিনি। ছোট থেকে ডিসলেক্সিয়া রোগে আক্রান্ত খাবি। স্কুল-কলেজের পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি। কখনো কারখানায়, কখনো হোটেলের কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। মাসিক বেতন হাজার ডলারের বেশি ছিল না কখনোই। তবে ২০২০ সালে তাকে চাকরি থেকে বের করে দেওয়া হয়।
তখনই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, মজার ভিডিও বানিয়েই নেটমাধ্যমে দর্শকদের মনোরঞ্জন করবেন। ভিডিও বানানো শুরুও করলেন খাবি। প্রথম এক মাসে তার ভিডিও মাত্র ৯ জন দেখতেন। সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যাও ছিল মাত্র দুই। যার মধ্যে একজন তার বাবা, অন্যজন তার এক প্রতিবেশী।
Advertisement
তবুও তিনি ভেঙে পড়েননি। নিয়মিত ভিডিও বানিয়ে গিয়েছেন। ধীরে ধীরে বিপুল পরিমাণ দর্শকদের কাছে পৌঁছলেনও তিনি। এখন তার অনুরাগীরা রয়েছেন বিশ্ব জুড়ে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে বিশেষ অতিথি হিসেবে তাকে দেখা যায়। ইডি শীরান, লিয়োনেল মেসি প্রমুখ খ্যাতনামা ব্যক্তির সঙ্গে দেখাও করেছেন খাবি।
সেনেগাল থেকে আসার পরেও তার কাছে ইতালির নাগরিকত্ব ছিল না। ২০২২ সালের ২৪ জুন ইতালি সরকার খাবিকে নাগরিকত্ব দেয়। তবে সব জনপ্রিয়তা ছাড়িয়ে গেছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের স্বীকৃতি।
সূত্র: গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস
কেএসকে/জিকেএস