১৯৮৭ সালে স্ত্রী আর দুই সন্তানকে রেখে জীবিকার তাগিদে ভারতে পাড়ি জমান মো. আব্দুল মুনাফ। এক বছরের মাথায় ১৯৮৮ সালে অবৈধপথে পাকিস্তান যান। এরপর ৩৫ বছরের পাকিস্তান জীবনের ১৭ বছরই বিভিন্ন কারাগারে কেটেছে আব্দুল মুনাফের।
Advertisement
দীর্ঘ তিন যুগ পরিবার ও স্বজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার পর বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পারিবারিক যোগাযোগ পুনঃস্থাপন (আরএফএল) বিভাগের সহযোগিতায় বুধবার (২৯ জুন) জন্মভূমি খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে ফিরেছেন ৩নং যোগ্যছলা ইউনিয়নের ফকির টিলা এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মুনাফ (৭০)।
নানা প্রক্রিয়া শেষে মঙ্গলবার (২৮ জুন) সকালে আরএফএল বিভাগ ও সদর দপ্তরের সহযোগিতায় একটি ফ্লাইটে দেশে ফেরেন মো. আব্দুল মুনাফ। পরে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা শেষে বুধবার (২৯ জুন) বিকেলে আরএফএল জুনিয়র সহকারী পরিচালক এস এম জাহিদুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল তাকে পরিবারের কাছে পৌঁছে দেয়।
এ সময় আরএফএল বিভাগের খাগড়াছড়ির সদস্য আল-আমিন, মানিকছড়ি ইউনিটের যুব প্রধান থোয়াই অংপ্রু মারমা ও মো. আবু জাফর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Advertisement
খাগড়াছড়ি জেলা রেড ক্রিসেন্ট সূত্রে জানা গেছে, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পারিবারিক যোগাযোগ পুনঃস্থাপন বিভাগের কারাবন্দি অনুসন্ধানে পাকিস্তানের একটি কারাগারে খোঁজ মেলে আব্দুল মুনাফের। পরে সংগঠনের সদর দপ্তর, পাকিস্তান রেড ক্রিসেন্ট ও ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রসের (আইসিআরসি) সহযোগিতায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
দেশে ফেরার পর এক প্রতিক্রিয়ায় মো. আব্দুল মুনাফ বলেন, দীর্ঘ ৩৫ বছর পাকিস্তানে অবস্থান করি। সেখানে বিভিন্ন কারণে প্রায় ১৭ বছর কেটেছে কারাগারে। অবশেষে রেড ক্রিসেন্টের সহযোগিতায় দুর্বিষহ জীবন থেকে মুক্তি পেয়েছি। তাদের সহযোগিতায় দেশে ফিরতে পেরেছি। স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়েকে কাছে পেয়েছি, এটাই আমার বড় পাওয়া।
এদিকে দীর্ঘ ৩৫ বছর পর মো. আব্দুল মুনাফের ফিরে আসার খবরে আনন্দের বন্যা বইছে পরিবার ও স্বজনদের মাঝে। তাকে দেখার জন্য যোগ্যছলা ইউনিয়নের ফকির টিলা এলাকার বাড়িতে ভিড় করে উৎসুক জনতা।
মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এফএ/এএসএম/জেআইএম
Advertisement