লালমনিরহাটে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পর বুধবার রাত থেকে কমতে শুরু করেছে তিস্তা, সানিয়াজান ও ধরলা নদীর পানি। তবে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙন। পানিবন্দি পরিবারগুলোর দুর্ভোগ বেড়েছে। শুকনো খাবার খেয়ে পরিবারগুলো রাত পার করছেন।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সকাল ৯টায় লালমিনরহাটের হাতীবান্ধায় তিস্তার দোয়ানী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (স্বাভাবিক ৫২.৬০) পানি। এছাড়া বুধবার ধরলার পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বৃহস্পতিবার তা কমে ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদৌলা জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বুধবার রাত থেকে পানি কমতে শুরু করেছে।
এ বছর তৃতীয় দফা বন্যায় অসহায় হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। জেলার পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলায় তিস্তা, সানিয়াজান ও ধরলা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
Advertisement
জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিঙ্গীমারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, কালমাটি, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ি, রাজপুর ও গোকুণ্ডা ইউনিয়নে তিস্তা নদীর পানি প্রবেশ করে বানভাসি মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। পাশাপাশি দেখা দিয়েছে তিস্তা নদীর ভয়াবহ ভাঙন। পরিবারগুলোর মাঝে খাদ্য ও নিরাপদ পানি সংকট দেখা দিয়েছে। একে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পানিবন্দি এসব মানুষ।
নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় স্বাভাবিক চলাচল ব্যহত হয়ে পড়েছে। পশুপাখি ও গবাদি পশু নিয়েও বিপাকে পড়েছেন এসব বানভাসি মানুষ। গরু ছাগলের খাদ্য-সংকটসহ নিরাপদ স্থানে রাখতেও ভোগান্তিতে পড়ছেন তারা।
এদিকে হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের প্রায় ৩০টি পরিবারের ঘরবাড়ি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে চর সিন্দুর্না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কমিউনিটি ক্লিনিক।
ফকির পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জালাল উদ্দিন বলেন, পানিবন্দি পরিবারগুলোর জন্য এখন পর্যন্ত সরকারি সহায়তা পাইনি। তবে ইউনিয়ন পরিষদের তালিকা জমা দিয়েছি।
Advertisement
সিন্দুর্না ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মফিজুর রহমান জানান, ১৫ দিন থেকে এই তিনটি ওয়ার্ডের প্রায় ১০০ জনের পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে তারা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
লালমনিরহাট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ধরলার পানি বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে গত রাত থেকে ধরলা ও তিস্তার পানি কমতে শুরু করেছে।
রবিউল হাসান/এফএ/এএসএম