আইন-আদালত

এসআই মাসুদের বিরুদ্ধে মামলা নিতে বাধা নেই

পুলিশি নির্যাতনের শিকার বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা ও সাবেক গণমাধ্যমকর্মী গোলাম রাব্বীর অভিযোগ (এফআইআর) মামলা হিসেবে গ্রহণ করতে আইনি কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন রিটকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব হোসেন খোকন।বুধবার দুপুরে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে আইন, মানবাধিকার ও সংবিধান বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’রিপোটার্স ফোরামের কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি কথা জানান।খোকন বলেন, হাইকোর্টের আদেশের ওপর চেম্বার বিচারপতির দেয়া তিন দিনের স্থগিতাদেশ গত ২৫ জানুয়ারি শেষ হয়েছে। সে হিসেবে এখন হাইকোর্টের আদেশই বহাল থাকলো। তিনি বলেন, গোলাম রাব্বীকে নির্যাতনের ঘটনায় গত ১৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট মামলা গ্রহণ করতে মোহাম্মদপুর থানাকে নির্দেশ দেন।  এছাড়াও গোলাম রাব্বীকে নির্যাতন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, রাব্বীর অভিযোগ এজাহার হিসেবে কেন নেয়ার নির্দেশ দেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার, তেজগাঁও জোনের উপ-কমিশনার, মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, মোহাম্মদপুর থানার এসআই মাসুদ সিকদার ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। ওই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ জানুয়ারি চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী রাব্বীর করা লিখিত অভিযোগ ‘এফআইআর’ হিসেবে নিতে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করেন এবং আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেন।  কিন্তু আপিল বিভাগে এ বিষয়ে শুনানির জন্য ২৫ জানুয়ারি কার্যতালিকায় আসেনি এবং চেম্বার আদালতে ও হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের মেয়াদ  বৃদ্ধির জন্য রাষ্ট্রপক্ষও কোন আবেদন করেনি। এতে করে স্থগিতাদেশের  কার্যকারিতা শেষ হয়ে গেছে। তাই হাইকোর্টের আদেশ বহাল থাকবে।এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি রোববার নির্যাতনের ঘটনায় তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদনটি করেন রাব্বীকে উদ্ধারকারী তার বন্ধু সাংবাদিক জাহিদ হাসান এবং দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান ও এস এম জুলফিকার আলী জুনু।প্রসঙ্গত, গত ৯ জানুয়ারি রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক গোলাম রাব্বীকে আটক করেন মোহাম্মদপুর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ শিকদারসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য। ইয়াবা ব্যবসায়ী-সেবনকারী বানানোর ভয় দেখিয়ে পাঁচ লাখ টাকা আদায়ের চেষ্টা করেন তারা। এরপর রাত ৩টা পর্যন্ত তাকে নিয়ে মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরে বেড়ান এবং মারধর করেন। এমনকি তাকে বেড়িবাঁধে নিয়ে ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকিও দেন।পরদিন সকালে এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন রাব্বেী। তবে তা মামলার হিসেবে গ্রহণ করেনি পুলিশ। পুলিশের মারধরের ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত ডিআইজি ব্যারিস্টার হারুন অর-রশিদকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুলিশ সদর দফতর।গোলাম রাব্বীকে নির্যাতনের ঘটনা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এসআই মাসুদকে ১৬ জানুয়ারি সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। এর আগে ১১ জানুয়ারি সকালে তাকে মোহাম্মদপুর থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়। মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দিন মীর বলেন, রাব্বীর ঘটনা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত চলছে। ওপরের অনুমতি পেলে রাব্বীর দেয়া অভিযোগটি মামলা হিসেবে রুজু করা হবে।এফএইচ/এসকেডি/আরআইপি

Advertisement