জাতীয়

পিকআপে পদ্মা সেতু দেখতে যাচ্ছিলেন, নামিয়ে দিলেন ম্যাজিস্ট্রেট

আজ থেকে সর্ব সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে পদ্মা সেতু। শুরুতেই উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা। পদ্মা সেতুতে গাড়ি চলাচলের প্রথম দিন জাজিরা প্রান্ত থেকে পিকআপে করে পদ্মা পাড়ি দিতে যাচ্ছিলেন প্রায় ২০ জন যাত্রী। তারা সবাই জাজিরা এলাকার স্থানীয়। তবে ছোট পিকআপে করে পদ্মা সেতু পাড়ি দিতে চাইলে সেটিকে আটকান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

Advertisement

রোববার (২৬ জুন) দুপুর আড়াইটার দিকে তাদের বাধা দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাজিরা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাবিবা ফারজানা।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পিকআপ চালকের কাছে জানতে চাইলে চালক রবিন মিয়া জানান, প্রায় ২০ জনের মতো জাজিরা বাজার থেকে পদ্মা সেতু পাড়ি দেওয়ার জন্য তার পিকআপে করে ওঠেন। পিকআপে করে মানুষ আনা-নেওয়া করা যায় না বলেও জানতেন না তিনি বলে জানান।

এ সময় জাজিরা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাবিবা ফারজানা পিকআপটি থেকে সবাইকে নামতে বলেন। সবাই নেমে গেলে খালি পিকআপ পদ্মা সেতু পাড়ি দেয়।

Advertisement

পিকআপে থাকা ১৫ বছরের এক তরুণ বলেন, সকাল থেকে খুব ইচ্ছা হচ্ছিলো পদ্মা সেতু দেখবো। কিন্তু আমাদের নিজস্ব কোনো গাড়ি নেই। আবার ঢাকায় ঘুরে আসার মতো টাকাও নেই। এজন্য পিকআপে করে পদ্মা সেতু দেখতে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট ম্যাডাম আমাদের সবাইকে নামিয়ে দিলেন। এখন কষ্ট নিয়েই বাড়ি ফিরতে হবে।

শনিবার (২৫ জুন) বেলা ১১টা ৫৮ মিনিটে মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। দুপুর ১২টা ৬ মিনিটে সেতু দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর জাজিরার অভিমুখে রওনা করে। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে বাংলাবাজার ঘাটের জনসভাস্থলে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। পরে তিনি সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেন।

২০০১ সালের ৪ জুলাই স্বপ্নের পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের নভেম্বরে নির্মাণকাজ শুরু হয়। দুই স্তরবিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাসের এ সেতুর ওপরের স্তরে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে একটি একক রেলপথ রয়েছে।

পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ৪২টি পিলার ও ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যানের মাধ্যমে মূল অবকাঠামো তৈরি করা হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ১৮ দশমিক ১০ মিটার। পদ্মা সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। এসব খরচের মধ্যে রয়েছে সেতুর অবকাঠামো তৈরি, নদী শাসন, সংযোগ সড়ক, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ, বেতন-ভাতা ইত্যাদি।

Advertisement

বাংলাদেশের অর্থ বিভাগের সঙ্গে সেতু বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী, সেতু নির্মাণে ২৯ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ঋণ দেয় সরকার। এক শতাংশ সুদ হারে ৩৫ বছরের মধ্যে সেটি পরিশোধ করবে সেতু কর্তৃপক্ষ। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার স্বপ্নের কাঠামো নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড।

টিটি/কেএসআর/এএসএম