‘বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে পুলিশকে জনগণের সেবক হতে হবে। প্রতিটি পুলিশ সদস্যকে অসহায় ও বিপন্ন মানুষের পাশে বিশ্বস্ত বন্ধুর মতো দাঁড়াতে হবে, যেন মানুষ ভরসা পায়’। মঙ্গলবার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ-২০১৬ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। এতে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশার কথাই প্রতিফলিত হয়েছে। অন্যদিকে পুলিশের শৃঙ্খলার দায়িত্ব পুরোপুরি বাহিনীর ওপর অর্পণ, অধিদপ্তর নয় দাপ্তরিকভাবে ‘পুলিশ সদর দপ্তর’ ঘোষণা, যানবাহন, আবাসন, ঝুঁকি ভাতাসহ বিভিন্ন দাবিও উঠেছে সম্মেলন থেকে। এসব বিবেচনায় নিয়ে পুলিশ বাহিনীকে আরো আধুনিক, দক্ষ ও চৌকস বাহিনীতে পরিণত করার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। পুলিশ বাহিনীকেও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনমানুষের আস্থা অর্জনে আরো বেশি আন্তরিক হতে হবে। গত ৭ বছরে পুলিশের অর্গানোগ্রামে ৭৩৯ ক্যাডার পোস্টসহ ৩২ হাজার ৩১টি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এই বৃদ্ধি সত্ত্বেও দেশের জনসংখ্যার হারের বিবেচনায় পুলিশ সদস্য সংখ্যা পর্যাপ্ত নয়। এজন্য আরও ৫০ হাজার পুলিশের পদ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২৭৭টি ক্যাডার পোস্টসহ ১৩ হাজার ৫৫৪টি পদে নিয়োগ এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। শিগগিরই অবশিষ্ট জনবল নিয়োগ সম্পন্ন হবে এমন কথাও বলা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।সরকার ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), ট্যুরিস্ট পুলিশ, রিভার পুলিশ, স্পেশাল সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রটেকশন ব্যাটালিয়ন গঠন করেছে। পুলিশ এসব উদ্যোগের ফল পেতে শুরু করেছে। জনবল নিয়োগের পাশাপাশি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় যানবাহন ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহের বিষয় সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে। এসবই আশার কথা। প্রত্যেক পুলিশ সদস্য অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করতে হয়। পুলিশের কর্মক্ষেত্র ও কর্মব্যাপ্তি প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধু চুরি-ডাকাতি, হত্যা-রাহাজানি বন্ধ নয়- সাইবার ক্রাইম, মানি লন্ডারিং, মাদক পাচার, স্বর্ণ চোরাচালান ও নারী-শিশু পাচার রোধে পুলিশকে কাজ করতে হয়। এ কারণে পুলিশ বাহিনীকে উন্নত প্রশিক্ষণ ও তথ্য-প্রযুক্তি প্রয়োগে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। এক্ষেত্রে পুলিশ সদস্যদের শক্তিশালী ভূমিকা পালনের বিকল্প নেই। পুলিশের প্রতি মানুষের প্রত্যাশা অনেক। সে জন্য প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যে বিস্তর ব্যবধান ঘটলেই পুলিশের সমালোচনা হয়। এটি ভালোভাবে নিতে হবে। পুলিশকে ভরসা করেই এই সমালোচনা। এবং সেটি পুলিশের ভালোর জন্যই। নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে পুলিশ বাহিনীকে কাজ করতে হয়। তাই এ সংক্রান্ত যে দাবি-দাওয়াগুলো ওঠে এসছে এ ব্যাপারেও সরকারকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। পুলিশের কাছ থেকে কাঙ্খিত সেবা পেতে হলে দক্ষ, চৌকস ও আধুনিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য যা যা করণীয় সেটি করতে হবে। পুলিশকেও জনপ্রত্যাশা পূরণে আরো আন্তরিক হতে হবে। কোনো বিষয়ে অভিযোগ উঠলে তা খতিয়ে দেখতে হবে। উন্নত সমৃদ্ধ ও আধুনিক বাংলাদেশ গঠন করার জন্য আধুনিক ও যুযোপযোগী পুলিশ বাহিনীর কোনো বিকল্প নেই।এইচআর/পিআর
Advertisement