বর্ণিল আয়োজনে উদ্বোধন হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতুর। রোববার (২৬ জুন) ভোর থেকে এ সেতুতে শুরু হবে যান চলাচল। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নান্দনিকতা, স্থাপত্যশৈলী ও প্রকৌশলগত দিক থেকে পদ্মা সেতু অনন্য একটি স্থাপনা। এরই মধ্যে একাধিক ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম একটি স্থাপনার স্বীকৃতি অর্জন করেছে পদ্মা সেতু।
Advertisement
পদ্মা সেতু দেশের প্রথম দ্বিতল বা দোতলা সেতু। এর ওপরতলা দিয়ে চলবে যাত্রীবাহী গাড়িসহ যানবাহন। আর নিচতলা দিয়ে চলবে রেল। ওপরতলার সড়কের অংশ দিয়ে রোববার থেকে যানবাহন চলাচল শুরু হলেও নিচতলার রেললাইন দিয়ে আগামী বছর ট্রেন চলাচলের আশাবাদ ব্যক্ত করা হচ্ছে।
সেতু সম্পর্কে পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, পদ্মায় দুটি সেতু। নিচে রেলসেতু, ওপরে ছয় লেনের সড়কপথ। ট্রেন যাবে ১৬০ কিলোমিটার গতিতে। এটা ট্রান্সএশিয়ান রেলওয়ের একটা অংশ।
তিনি জানান, দেশে ও দেশের বাইরে পদ্মা সেতু অন্যতম কিছু রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। এরমধ্যে অন্যতম হলো- মাটির ১২০-১২৭ মিটার গভীরে গিয়ে পাইল বসানো হয়েছে এ সেতুতে, যা অন্যতম একটি রেকর্ড। পৃথিবীর অন্য কোনো সেতু তৈরিতে এত গভীরে গিয়ে পাইল বসাতে হয়নি।
Advertisement
শফিকুল ইসলাম বলেন, দ্বিতীয় রেকর্ড হলো- ভূমিকম্পের বিয়ারিং সংক্রান্ত। এ সেতুতে ‘ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিং’র সক্ষমতা ১০ হাজার টন। এখন পর্যন্ত কোনো সেতুতে এমন সক্ষমতার বিয়ারিং লাগানো হয়নি। সেতু নির্মাণের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রেন। সাড়ে তিন বছরে এ ক্রেনের ভাড়া হিসেবে দেওয়া হয়েছে ১২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পেও টিকে থাকার মতো করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।
পদ্মা সেতুর নিচে চলছে রেললাইনের কাজ/ফাইল ছবি
এ সেতুর প্রকল্প পরিচালক বলেন, পদ্মা সেতুর জন্য পাঁচ কোটি ৯৪ লাখ ৮২ হাজার ঘনমিটার পলি ড্রেজিং করা হয়েছে, যার ওজন দুই কোটি পাঁচ হাজার ৮৭০ টন। পদ্মা সেতুর ১২৫ কেজি ওজনের জন্য এক কোটি ৭৩ লাখ এবং ৮০০ কেজি ওজনের ৪৪ লাখ জিও ব্যাগ ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া একাধিক রেকর্ড হয়েছে পদ্মা সেতুতে।
পদ্মা সেতুতে বিদ্যুৎ লাইন আছে, সেখানেই প্রায় এক হাজার কোটি টাকা লেগেছে। এছাড়া গ্যাস লাইন আছে, সেখানেও ৩০০ কোটি টাকা লেগেছে বলে জানিয়েছেন শফিকুল ইসলাম। এছাড়া এ সেতু দিয়ে অপটিক্যাল ফাইবার লাইনও নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ।
Advertisement
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। এর অ্যাপ্রোচ সড়ক ১২ দশমিক ১১৭ কিলোমিটার।
এইচএআর/এএএইচ/এমএস