দেশজুড়ে

এক ধানে দুই চাল

সচরাচর একটি ধানের দানায় কেবল একটি চালই পাওয়া যায়। কিন্ত জলাবদ্ধ পতিত জমিতে এক ধানে দুই চালের ধান চাষ করে ব্যাপকবাবে আলোচনায় এসেছেন ঝিনাইদহের প্রত্যন্ত গ্রামের মকবুল হোসেন নামের এক কৃষক। তার বাড়ি কালীগঞ্জে উপজেলার ৪ নং নিয়ামতপুর ইউনিয়নের মহেশ্বরচাঁদা গ্রামে।কৃষক মকবুল হোসেন জানান, ৪ বছর আগে তিনি মাত্র ২০ গ্রাম দুই চাল বিশিষ্ট ধান বীজ পেয়েছিলেন একটি বেসরকারি সংস্থার  কাছ থেকে। এ এলাকায় দুই চালের ধান চাষ নেই। তাই অতি আগ্রহে এগুলো বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরে ভাল করে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করেন। এরপর আমন মৌসুমে বীজতলার একপাশে চারা তৈরি করেন। ওই বছর অন্য জাতের ধান ক্ষেতের একপাশে রোপণের মাধ্যমে মাত্র ৬শ গ্রাম ধান পান। পরের বছর পুষ্ট বীজগুলো বেছে আগের বছরের চেয়ে একটু উঁচু জমিতে রোপণ করেন। কিন্ত এ বছর ধানগাছগুলো অপেক্ষাকৃত চিকন হয়ে যায়। পরবর্তী মৌসুমে বাড়ির পাশের ডোবা জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করে উঁচু জমির চেয়ে গাছগুলো সতেজ দেখতে পান। তখন বুঝতে পারেন এটা জলাবদ্ধ জমিতে ভাল ফলন পাওয়া যাবে। ইতোমধ্যে বীজ হিসেবে ওই ধান প্রতি কেজি ১০০ টাকা করে ৪০ কেজি বিক্রি করেছেন। এ মৌসুমে তিন শতক জমি থেকে তিনি ফলন পেয়েছেন দেড় মণ। সবটুকু ধান বীজ হিসেবে রেখে দিয়েছিলেন।তিনি আরও জানান, পানি সহনশীল এ ধান ডোবা জলাবদ্ধ বাঁওড়-খাল-বিলে চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে। এ জাতীয় ধান বেশি পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকতে পারে। এ জাতের ধান গাছগুলো মাঠের অন্য জাতের ধান গাছের চেয়ে অপেক্ষাকৃত লম্বা ও মোটা হয়। ধানের বাইলগুলো অপেক্ষাকৃত বড়। জলাবদ্ধ জমি এমনকি বেশি পানিতে লড়াই করে টিকে থাকা যেকোনো ধানের চেয়ে এ ধান বেশি ফলনশীল। চাল চিকন হওয়ায় বাজারে এ জাতীয় ধানের দামও বেশি। এ ধানের রোগবালাই হয় কম। ফলে উৎপাদন খরচও কম হয়।ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. শাহ মো. আকরামুল হক বলেন, দুই চালের ধান এ অঞ্চলে এই প্রথম। এ ধানের নমুনা পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার পর এ ধানের গুণাগুণ জানা যাবে।এসএস/পিআর

Advertisement