দেশজুড়ে

পদ্মা সেতু দেখতে আসার পথে গাড়িতেই ঘুম, গাড়িতেই খাওয়া

রান্নাবান্না করে রওনা দিতে রাত ৩টা বেজে গেছে। তাই রাতে ঘুম হয়নি। ঝিমুতে ঝিমুতে আইছি। এখনো জনসভাস্থলে পৌঁছাতে ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার বাকি। এখন বাজে বেলা পৌনে ১১টা। দীর্ঘ যানজট তাই গাড়িতে বসেই খাওয়া-দাওয়া করছি।

Advertisement

এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী দিনে মাদারীপুরের শিবচরে জনসভায় যোগ দিতে আসা মো. আল আমিন।

তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা মোট ১১ জন একসঙ্গে পিকআপে করে জনসভায় অংশ নিতে এসেছি। যত কষ্টই হোক আর যাই হোক; হেঁটে গেলেও আমরা পদ্মা সেতু এলাকায় পৌঁছাবো।’

শনিবার (২৫ জুন) দেশের বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন উপলক্ষে সারাদেশে চলছে উৎসবের আমেজ।

Advertisement

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন লাখ লাখ মানুষ। ভাঙ্গা-মাদারীপুরের মহাসড়কের শিবচর মুন্সিবাজার এলাকায় দীর্ঘ ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়।

২০০১ সালের ৪ জুলাই স্বপ্নের পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের নভেম্বরে নির্মাণকাজ শুরু হয়। দুই স্তরবিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাসের এ সেতুর ওপরের স্তরে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে একটি একক রেলপথ রয়েছে।

পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ৪২টি পিলার ও ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যানের মাধ্যমে মূল অবকাঠামো তৈরি করা হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬.১৫০ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ১৮.১০ মিটার।

পদ্মা সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। এসব খরচের মধ্যে রয়েছে সেতুর অবকাঠামো তৈরি, নদী শাসন, সংযোগ সড়ক, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ, বেতন-ভাতা ইত্যাদি।

Advertisement

বাংলাদেশের অর্থ বিভাগের সঙ্গে সেতু বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী, সেতু নির্মাণে ২৯ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ঋণ দেয় সরকার। ১ শতাংশ সুদ হারে ৩৫ বছরের মধ্যে সেটি পরিশোধ করবে সেতু কর্তৃপক্ষ।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার স্বপ্নের কাঠামো নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড।

এন কে বি নয়ন/এসআর/এমএস