পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী জনসভায় নৌযানের পাশাপাশি বাসেও আসছেন মানুষ। শনিবার (২৫ জুন) ভোর থেকেই চুয়াডাঙ্গাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে বাসে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাংলাবাজার ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ঘাটের জনসভাস্থলে আসতে শুরু করেন হাজার হাজার মানুষ। পদ্মা সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়কে বাস থেকে নেমে সমাবেশস্থলে হেঁটে যাচ্ছেন তারা। সেতু উদ্বোধনের আনন্দে পথের ক্লন্তিও পরোয়া করছেন কেউ।
Advertisement
সরেজমিনে দেখা গেছে, শিবচরের পাঁচ্চর থেকে পদ্মাসেতুর অ্যাপ্রোচ সড়কের দীর্ঘ কয়েক কিলোমিটার জুড়ে দূরপাল্লার অসংখ্য বাসের দীর্ঘসারি। বাস থেকে নেমে হেটে জনসভাস্থলের দিকে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ।
চুয়াডাঙ্গা থেকে আসা মো. তানভীর জাগো নিউজকে বলেন, ‘দুই শতাধিক বাস এসেছে। মহাসড়কে বাস আটকে আছে। আমরা হেঁটে সমাবেশস্থলে যাচ্ছি।’
পাঁচ্চর এলাকার সুমন শীল বলেন, ‘দুই কিলোমিটার পথ হেঁটে সমাবেশে যাচ্ছি। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হচ্ছে এ আনন্দের কাছে পথের ক্লান্তি ম্লান।’
Advertisement
এদিকে শিবচরের বাংলাবাজার ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ঘাটের সভাবেশস্থল ভোর থেকেই মানুষের পদচারণায় মুখোর হয়ে উঠছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কানায় কানায় ভরে ওঠে সমাবেশ এলাকা।
বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতুর সড়ক পথ রোববার (২৬ জুন) ভোর ৬টা থেকে সব ধরনের যানচলাচল শুরু হবে।
২০০১ সালের ৪ জুলাই স্বপ্নের পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের নভেম্বরে নির্মাণকাজ শুরু হয়। দুই স্তরবিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাসের এ সেতুর ওপরের স্তরে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে একটি একক রেলপথ রয়েছে।
পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ৪২টি পিলার ও ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যানের মাধ্যমে মূল অবকাঠামো তৈরি করা হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬.১৫০ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ১৮.১০ মিটার।
Advertisement
পদ্মা সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। এসব খরচের মধ্যে রয়েছে সেতুর অবকাঠামো তৈরি, নদী শাসন, সংযোগ সড়ক, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ, বেতন-ভাতা ইত্যাদি।
বাংলাদেশের অর্থ বিভাগের সঙ্গে সেতু বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী, সেতু নির্মাণে ২৯ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ঋণ দেয় সরকার। ১ শতাংশ সুদ হারে ৩৫ বছরের মধ্যে সেটি পরিশোধ করবে সেতু কর্তৃপক্ষ।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার স্বপ্নের কাঠামো নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড।
এন কে বি নয়ন/এসজে/এএসএম