দেশের দক্ষিণের জেলাগুলোর একটি বরগুনা। নদীবেষ্টিত ও সমুদ্র উপকূলের জেলা হওয়ায় মৎস্যশিল্পকে কেন্দ্র করে জীবিকানির্বাহ করেন এ জেলার অধিকাংশ মানুষ। কিন্তু পরিবহন ব্যবস্থা উন্নত না হওয়ায় জেলেরা মাছের কাঙ্ক্ষিত দাম পান না। তবে পদ্মা সেতু চালু হলে এ সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছেন আড়তদার ও পাইকাররা।
Advertisement
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আড়ত থেকে এখন এক চালান মাছ এনে ঢাকায় বিক্রি করতে পাইকারদের দুই থেকে তিনদিন সময় লাগে। পদ্মা সেতু চালু হলে সকালে মাছ কিনে বিকেলে ঢাকায় বিক্রি করা যাবে। এতে মাছের ন্যায্য দাম পাবেন জেলেরা।
পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পাইকার ফোরকান দফাদার জাগো নিউজকে জানান, বর্তমানে ঢাকার চাহিদা দেখে মাছ কেনেন তারা। তবে কেনা মাছ পদ্মা পাড়ি দিতে অপেক্ষায় থাকতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। অনেক সময় এক থেকে দুদিনেও চলে যায়। এতে লোকসানের মুখে পড়তে হয় বারবার। তবে পদ্মা সেতু চালু হলে সকালে মাছের চাহিদা বুঝে বিকেলের মধ্যে সে মাছ ঢাকায় বিক্রি করা যাবে। এতে দাম নিয়ে বেশি দর কষাকষি করতে হবে না।
অবতরণ কেন্দ্রের আরেক পাইকার জালাল মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, সব পাইকাররাই নির্দিষ্ট পুঁজি নিয়ে মাছ কেনাবেচা করে। একবার মাছ কিনলে তার সে পুঁজি মাছে আটকে যায়। মাছ বিক্রি করতে পারলে লাভসহ পুঁজি ফিরে আসে, তখন দ্বিতীয়বার মাছ কিনতে পারেন ওই পাইকার। পদ্মাপাড়ে ফেরি পার হতে দুই-একদিন সময় লাগে। তাই একবার মাছ কেনার পর দ্বিতীয়বার কিনতে সময় লাগে দুই থেকে তিনদিন। এতে লোকসান যেমন জেলেদের তেমনি পাইকারদেরও।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে মাসে ১০ থেকে ১৫ বার মাছ পাঠাতে পারি। আর পদ্মা সেতু চালু হলে প্রতিদিন মাছ পাঠাতে পারবো। এতে জেলে ও পাইকার উভয়ের আয় বাড়বে।
সমুদ্রগামী ট্রলার এফবি মায়ের দোয়ার মাঝি জাফর হাওলাদার বলেন, মাছ বেচতে গেলেই পাইকররা দাম বলতে চায় না। মাছ পাঠাতে দেরি হওয়ায় মাছের রং পরিবর্তন হয়ে যায়, তাই ভালো মাছ নিয়ে গেলেও স্বল্পমূল্যে মাছ কেনেন পাইকাররা। এতে উত্তাল সমুদ্র দাপিয়ে মাছ ধরেও ভাগ্যের পরিবর্তন আনতে পারছিলেন না জেলেরা। তবে পদ্মা সেতু চালু হলে এই বাধা আর থাকবে না। বাজারে তখন পাইকার সংখ্যা বাড়বে। ভালো দামে মাছ বিক্রি করে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারবেন জেলেরা।
পাথরঘাটা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তফা চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, জেলেরা মাছ ভালো দামে বিক্রি করতে পারলে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে। তখন তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর সঙ্গে সৌখিন সামগ্রী কিনবেন। এতে পদ্মা সেতু চালু হলে শুধু যে মৎস্যজীবীদের উপকার হবে তা নয়, সামগ্রিক দক্ষিণাঞ্চলের সব ব্যবসায়ীদের উন্নয়ন হবে।
এমআরআর/এএইচ/জেআইএম
Advertisement