ধর্ম

যেসব পশু কোরবানি করা মাকরূহ

কোরবানি আল্লাহর জন্য আত্মত্যাগের অনন্য নিদর্শন। নিখুঁত ও দোষবিহীন পশু দ্বারা কোরবানি আদায় করতে হয়। এমনকি কোরবানির পশু মানুষ দ্বারা ঘরে লালিত-পালিত হতে হয়। বন-জঙ্গলের হিংস্র গরু-মহিশ, ভেড়া-ছাগল দ্বারা কোরবানি হবে না। এ ছাড়াও পশুর কিছু সমস্যা থাকলে তা দ্বারা যেমন কোরবান হবে না আবার কোরবানি হলেও তা হবে মাকরূহ। যেসব দোষে পশু কোরবানি মাকরূহ এবং নিষেধ তাহলো-

Advertisement

কোরবানি মাকরূহ

পশুর এমন কতগুলো শারীরিক দোষ-ত্রুটি আছে যা থাকলে কোরবানি আদায় হবে কিন্তু তা মাকরূহ হবে। এ সব দোষত্রুটিযুক্ত পশু কোরবানি না করাই ভালো। আর তাহলো-

১. পশুর শিং ভাঙ্গা।

Advertisement

২. পশুর কান কাটা।

৩. পশুর লেজ কাটা।

৪. পশুর ওলান কাটা কিংবা লিঙ্গ কাটা ইত্যাদি।

যে পশুতে কোরবানি না করার পরামর্শ

Advertisement

পশুর এমন কিছু শারীরিক দোষ-ত্রুটি আছে; যার ফলে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ পশুগুলো দিয়ে কোরবানি করতে নিষেধ করেছেন। তাহলো-

১. মুকাবালা : যে পশুর কানের একদিক কাটা

হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের আদেশ করেছেন, আমরা যেন কোরবানির পশুর চোখ ও কান উত্তমরূপে দেখে নিই। আর আমরা যেন কানের আগার দিক কাটা, কানের পেছন দিক কাটা, লেজ কাটা এবং কানের গোড়া থেকে কাটা পশু কোরবানি না করি।’ (নাসাঈ)

২. মুদাবারা : যে পশুর কানের মূল থেকে কাটা

হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের আদেশ করেছেন, আমরা যেন (কোরবানি পশুর) চোখ ও কান ভালোরূপে দেখে নিই। আর আমরা যেন এমন পশু দ্বারা কোরবানি না করি যা কানা, যার কানের একদিক কাটা, যার কানের গোড়া কাটা এবং যার কান ফাঁড়া এবং যার কানে ছিদ্র আছে।’ (নাসাঈ)

৩. খারকা : যে পশুর কানে ছিদ্র আছে

হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঐ পশু কোরবানি করতে নিষেধ করেছেন যার কানের একদিক কাটা বা গোড়া কাটা বা যার কান কাটা বা যার কানে ছিদ্র আছে এবং যার কান মূল থেকে কাটা।’ (নাসাঈ)

৪. শারকা : কান ফাটা পশু

হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে পশুর কানের একদিক কাটা বা কানের গোড়ার দিক থেকে কাটা অথবা যার কান ফাটা বা যার কানে ছিদ্র আছে কিংবা যে পশু কানা, তা দ্বারা কোরবানি করা যাবে না।’ (নাসাঈ)

৫. আযবা : শিং ভাঙ্গা পশু

হজরত জুরাই ইবনে কুলায়ব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আমি হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বলতে শুনেছি, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শিং ভাঙ্গা পশু কোরবানি করতে নিষেধ করেছেন। এরপর আমি তা সাঈদ ইব্‌ন মুসায়্যিব রাদিয়াল্লাহু আনহুর কাছে উল্লেখ করলে তিনি বললেন, ‘শিংয়ের অর্ধেক বা তার বেশি ভাঙ্গা হলে সেই পশু কোরবানি করতে নিষেধ করেছেন।’ (নাসাঈ)

যেসব পশু দিয়ে কোরবানি হবে না

১. জংলি পশু দিয়েও কোরবানি করা যাবে না, যার মধ্যে জংলি ভাব রয়ে গেছে। যদিও জংলি পশুর গোশত হালাল; কিন্তু কোরবানির ক্ষেত্রে কোনো জংলি পশু দিয়ে কোরবানি করা বৈধ নয়।

২. আবার হরিণ দ্বারাও কোরবানি দেওয়া যাবে না। যদিও হরিণের গোশত হালাল। চাই তা জংলি হোক কিংবা ঘরে লালিত-পালিত হোক।

কোরবানি করার ক্ষেত্রে মুমিন মুসলমানের উচিত, ইসলামি শরিয়তের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী পশু কোরবানি করা। যেসব পশুতে কোরবানি মাকরূহ কিংবা হবে না; সেসব পশু কোরবানি করা থেকে বিরত থাকার বিকল্প নেই।

আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুসলিমাকে সঠিক পশু দ্বারা কোরবানি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এএসএম