রাজনীতি

আগামী আন্দোলনেও নেতৃত্বের আসনে থাকবে যুবদল

চলতি মাসেই যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নতুন সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না। জাগো নিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন। নির্বাচন বা দলীয় পদবির ইচ্ছা নিয়ে নয় কর্মের মাধ্যমে রাজনীতিতে এগিয়ে যেতে চান তিনি।

Advertisement

জাগো নিউজ: বর্তমানে দেশের যুবসমাজ কেমন আছে?

মোনায়েম মুন্না: যেখানে বাংলাদেশ ভালো নেই, সেখানে যুবসমাজ কীভাবে ভালো থাকবে? বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক সামাজিক পরিস্থিতি চরম বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

জাগো নিউজ: আপনাদের সামনে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে?

Advertisement

মোনায়েম মুন্না: যে কোনো কাজের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল একটি বৃহত্তর সংগঠন। জনগণের একমাত্র আস্থার জায়গা হচ্ছে বিএনপি। বিএনপির বৃহৎ একটি সংগঠন যুবদল। এই সংগঠনের কাজ করতে গিয়ে কিছু চ্যালেঞ্জ তো থাকবেই। এই চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে সামনে যাওয়ার জন্য আমরা সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা তৈরি করছি। রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে নিজেদের কর্মদক্ষতা প্রমাণ করে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন আন্দোলনে ভূমিকা রাখবো ইনশাআল্লাহ।

জাগো নিউজ: সংগঠন কীভাবে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করছেন এবং কোন যোগ্যতা বিবেচনায় আপনার কমিটিতে নেতাদের ঠাঁই দেবেন?

মোনায়েম মুন্না: এই সংগঠনের নেতাকর্মীদের মানুষের সঙ্গে গণসংযোগ, গ্রহণ যোগ্যতা নেতৃত্বের গুণাবলিসম্পন্ন লোকদের আমরা স্থান দেব। যুবদলের প্রতিটি ইউনিট, মহানগর থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে ভালো নেতৃত্ব আমরা প্রাধান্য দেব।

জাগো নিউজ: যুবদলের কমিটি কবে নাগাদ পূর্ণাঙ্গ হতে পারে?

Advertisement

মোনায়েম মুন্না: দ্রুত সময়ের মধ্যেই যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হবে। আশা করছি চলতি মাসের মধ্যেই সেটা হয়ে যাবে।

জাগো নিউজ: ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট কতটা যুববান্ধব বলে আপনি মনে করেন?

মোনায়েম মুন্না: এ সরকারের আমলে যতগুলো বাজেট দেওয়া হয়েছে কোনো বাজেটই আমার কাছে যুববান্ধব মনে হয়নি। এটা হচ্ছে তথাকথিত বাজেট। উন্নয়নের নামে মেগা প্রজেক্টের যে বাজেট আমরা দেখে এসেছি, সে সব বাজেট যেমন জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হয়নি, এতে যুবসমাজের আশা-আকাঙ্ক্ষারও প্রতিফলন নেই।

জাগো নিউজ: এর আগে যুবদলে পদবাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে, আপনার নেতৃত্বে এই কমিটি কী এসব অভিযোগমুক্ত থাকতে পারবে?

মোনায়েম মুন্না: অভিযোগ অনেকেই করে, আসলে একথাটা সবসময় সঠিক নয়। বড় রাজনৈতিক দলে পদের প্রতি প্রতিযোগিতা থাকে। যখন কেউ কোনো পদের জন্য রিকোয়েস্ট করে; তখন পদ না পেলে এরকম অভিযোগ করে। বর্তমানে খুব চ্যালেঞ্জের মধ্যে কমিটি করতে হচ্ছে, পদবাণিজ্যের এরকম কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। পদপ্রার্থীর বিভিন্নভাবে দৌড়ঝাঁপ করে তারা যদি বিচ্ছিন্ন কোনো কথা বলে সেটা দলের কোনো কথা নয়। আমি এটা সমর্থন করি না।

জাগো নিউজ: নব্বইয়ের দশকে ছাত্রসমাজের পাশাপাশি যুবদলও আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রভাগে থেকেছে, সেই অতীত কি ফেরানো সম্ভব?

মোনায়েম মুন্না: নব্বইয়ের আন্দোলনে যুবকদের অনেক ভূমিকা ছিল। ছাত্রদলেরও অনেক ভূমিকা ছিল। বিগত দিনে যুবদলের অনেক নেতা গুম হয়েছেন, হত্যার শিকার হয়েছেন। কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও যুবদল কাজ করে যাচ্ছে। আগামী আন্দোলনেও যুবদল নেতৃত্বের আসনে থাকবে ইনশাআল্লাহ।

জাগো নিউজ: যুবদল তাদের হারানো গৌরব, ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে পারবে?

মোনায়েম মুন্না: যুবদলের গৌরব ঐতিহ্য হারিয়ে গেছে এটা আমি স্বীকার করি না। প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে অনেক সময় কাজ করা যাচ্ছে না বিধায় আমাদের কাজের ফোকাসিংটা এক রকম কিছু নয়। আমরা ওয়ার্ড-উপজেলা পর্যায়ে মিটিং করতে পারছি না, যে কারণে সংগঠনের সাধারণ গতিশীলতা দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু আমরা কাজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। গৌরব হারিয়ে যায়নি। একটা বড় আন্দোলনের সফলতা আসার পরই গৌরবগাথা রচিত হয়। সেই পরিস্থিতি হয়তো বাংলাদেশে আসেনি। কিন্তু আসবে না এরকম কোনো গ্যারান্টি নেই। এই যুবদলের নেতৃত্বেই আশাকরি কার্যকর আন্দোলন গড়ে উঠবে বাংলাদেশে।

জাগো নিউজ: যুবসমাজের উদ্দেশ্যে আপনার কোনো বার্তা আছে কি না?

মোনায়েম মুন্না: যুবসমাজের প্রতি একটি বার্তা এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে উৎখাত করার জন্য আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যবদ্ধ শক্তিকে বৃহৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করে যুব আন্দোলন, ছাত্র আন্দোলন, জনতার আন্দোলন মিলে একটি কার্যকর আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানোর জন্য আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হই।

জাগো নিউজ: চার দশক ধরে রাজনীতি করছেন। বর্তমানে যুবদলের শীর্ষ নেতৃত্বে রয়েছেন, ভবিষ্যতে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?

মোনায়েম মুন্না: রাজনীতিতে আমি আমার কর্মের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে চাই। কিন্তু দল আমাকে যেখানে রাখবে আমি সেখানেই কাজ করতে চাই। আমার বড় কোনো ইচ্ছা নেই যে, কোথাও নির্বাচন করতে হবে অথবা বড় কোনো পদের জন্য প্রতিযোগিতা করতে হবে। এসব চিন্তার মধ্যে আমি নেই, কিন্তু আমাকে যেখানে দেবে আমি সেখানে কাজ করতে প্রস্তুত।

কেএইচ/এসএইচএস/জিকেএস