খেলাধুলা

এখন আমরা ৮-১০ গোল খাই না: কাজী সালাউদ্দিন

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘এক সময় আমরা আন্তজার্তিক ম্যাচে ৮-১০ গোল খেতাম। এখন খাই না।’

Advertisement

বৃহস্পতিবার যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আয়োজিত, ‘বছরব্যাপি ফুটবল প্রতিযোগিতাসমূহ আয়োজন, প্রশিক্ষণ প্রদান এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে শক্তিশালীকরণ’ - শীর্ষক কর্মশালা শেষে গণমাধ্যমকে এ কথা বলেছেন বাফুফে সভাপতি।

এই কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিথ ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। আরো উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব পরিমল সিংহ, বাফুফের অংশীদার বিভিন্ন ক্লাব, সংস্থার প্রতিনিধিরা।

ফুটবল উন্নয়নে সরকারের কাছে বাফুফে যে ৪৫০ কোটি টাকা চেয়েছে ৫ বছরের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য, সেই অর্থ পেলে কোন কোন খাতে বরাদ্দ দিয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখা যায় তা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে।

Advertisement

কর্মশালা শেষে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ‘এই কর্মশালায় অনেক সুন্দর বিষয় উঠে এসেছে। সবার প্রস্তাবনাগুলো আমার ভালো লেগেছে। এইসব প্রস্তাবনা নিয়ে আমাদের আরো কয়েকটি সভা করতে হবে।’

বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘সবাই শুধু বলে আমাদের অতীত অতীত অতীত। অতীতেরতো আমিও। আমিতো জানি আমরা কয়টা ইন্টারন্যাশনাল ম্যাচ খেলেছি। কি রেজাল্ট ছিল। তখন আপনাদের মতো এমন মিডিয়া ছিল না। তখন আমাদের সময় যেটা ছিল, ঢাকা স্টেডিয়ামে দর্শক আসার অভ্যাস ছিল। আজকে এ অভ্যাসটা নাই। দর্শক মাঠে আসতো আবাহনী-মোহামেডানের খেলায়। তাছাড়া আমরা যাদের সঙ্গে খেলতাম, কোন টপ টিমের সঙ্গে খেলিনি।’

অতীতে বাংলাদেশে শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেললে অনেক গোল খেতো উল্লেখ করে বাফুফে সভাপতি বলেছেন,‘আমি আপনাদের দেখিয়ে দিতে পারি ৮০ সাল থেকে ৯০ সালের মধ্যে কতগুলো ম্যাচে ৮ গোল ১০ গোল খেয়েছি। এটা কিন্তু আজকে আমরা খাই না। তাই কনসেপ্টটা হলো তখন মাঠে দর্শক আসতো। আমি দেখেছি আমাদের খেলায় ৪০-৫০ হাজার দর্শক আসতো মোহামেডান-আবাহনী ম্যাচে। আজকে দর্শক আসাটাই বন্ধ হয়ে গেছে। ওই নেশাটাই নাই। আজকাল দর্শকদের দেখা গেছে টেলিভিশনে বসে টক-শোতে থাকে। যার টক-শোতে থাকে তারা কিন্তু মাঠে খেলা দেখতে আসে না। যারা খেলা দেখেছে তারা বলবে, ইয়েস ওই সময়ের সঙ্গে তুলনা করলে আজকের খেলোয়াড়রা অনেক বেটার।’

গোটা এশিয়ার ফুটবলে অনেক ডেভেলপমেন্ট হয়েছে উল্লেখ করে কাজী মো. সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘আজকে অনেক কম্পিটিশন। আমাদের বহু দলের নাম বলতে পারি আমাকেসহ যে, ৭ গোল ৮ গোল খাওয়ার অভ্যাস আছে। এশিয়ার সবগুলো দেশ এত ডেভেলপ করেছে যে, উদাহরণ দিয়ে বলি- আমি কাতারের বিপক্ষে গোল করে জিতিয়েছি। আমি অনেক দেশের বিপক্ষে গোল করে জিতিয়েছি। আজকে যেটা হয়েছে সেই কাতার বিশ্বকাপ খেলে, বিশ্বকাপ আয়োজন করে। সর্বশেষ ১৫-২০ বছরের পুরো এশিয়ায় পেশাদার ফুটবল চালু হয়েছে। আমি যখন হংকংয়ে খেলতে যাই, তখন এশিয়ার ওই একটিমাত্র দেশে পেশাদার ফুটবল ছিল। এখন বাংলাদেশেও পেশাদার লিগ চলে। এশিয়ার ফুটবল অনেক ডেভেলপ হয়েছে।’

Advertisement

ফুটবলে এখন চাই অনেক টাকা। উদাহরণ দিয়ে বাফুফে সভাপতি বলেছেন,‘একজন প্লেয়ার যদি সাইনিং মানি পান ৩ হাজার কোটি টাকা তাহলে বুঝতে হবে ফুটবল কোথায় চলে গেছে। এই পার্থক্যটা কাভার করতে গেলে সরকার, মন্ত্রণালয়, ফুটবল ফেডারেশন, ক্লাব, মিডিয়া, খেলোয়াড় সবাই মিলে কাজ করতে হবে। ফুটবল উন্নয়নে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ, এটা একটা যুদ্ধ, বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন যুদ্ধ।’

আরআই/আইএইচএস/