জাতীয়

চলতি পথে তালশাঁসে তৃপ্তি

মধুমাস জ্যৈষ্ঠ বিদায় নিয়েছে, তাতে কী? এই মাসের বিদায়ের পরও দেশের বাজারে মিলছে হরেক রকমের মৌসুমি ফল। আম, জাম, কাঁঠাল ও আনারসের পাশাপাশি রাজধানীতে তালশাঁসেরও দেখা মিলছে। ডাবের মতো কচি তালও ক্লান্ত পথিকের গলা ভিজিয়ে, শরীরকে চাঙ্গা করে তোলে।

Advertisement

বুধবার (১৫ জুন) ঢাকা মহানগরীর দনিয়া বাজার ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় কয়েকজন মৌসুমি ফল বিক্রেতাকে তালশাঁস বিক্রি করতে দেখা গেছে।

যদিও গ্রাম ছাড়া কংক্রিটের নগরে তালগাছের দেখা মেলে না। তবে শহুরে মানুষের কাছে তালশাঁসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে গরম পড়লে রাজধানীর ফুটপাত ও ব্যস্ত সড়কের পাশে তালশাঁসের পসরা সাজিয়ে বসেন মৌসুমি ফল বিক্রেতারা। সেখানে জটলা করতে দেখা যায় ফলপ্রেমীদের।

সাধারণত কচি অবস্থায় তালের যে নরম বীজ খাওয়া হয়, সেটিই তালশাঁস নামে পরিচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, কচি এই তালের অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। এতে ভিটামিন এ, বি, সি, জিংক, পটাশিয়াম, আয়রন ও ক্যালসিয়ামসহ আরও অনেক খনিজ উপাদান রয়েছে। এছাড়া হৃদযন্ত্রের সুরক্ষায়ও তালের ভূমিকা অপরিসীম।

Advertisement

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার কয়েকজন মৌসুমি ফল বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গোপালগঞ্জ, খুলনা, ফরিদপুর ও বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ঢাকার পাইকারি বাজারে আসে তালশাঁস। পিস হিসেবে বিক্রির পাশাপাশি কচি তালের ভেতরের শাঁসও আলাদা করে বিক্রি করেন তারা।

দনিয়া বাজারের মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবিরের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ। তিনি তালশাঁসের পাশাপাশি নারকেলের ডাবও বিক্রি করেন। তার দোকানে আছে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু ও কলা। তালশাঁসের ব্যবসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ বছর ব্যবসা ভালো হয়েছে। পাইকারি প্রতি পিস ৭ থেকে ১০ টাকা করে যাত্রাবাড়ী থেকে কিনে এনে ৩০ টাকায় বিক্রি করি।

আবার আলাদা করে প্রতি পিস শাঁসও ১০ টাকা করে বিক্রি করেন হুমায়ুন। কিছুদিন আগেও দিনে ৫০০ পিস তাল বিক্রি করেছেন। তবে এখন ফাঁকে ফাঁকে বৃষ্টি হচ্ছে বলে বিক্রি কিছুটা কমেছে। দিনে এখন ২০০ থেকে ২৫০ পিস তাল বিক্রি করেন তিনি।

যাত্রাবাড়ীর পাইকারি তাল বিক্রেতা কবির বলেন, তাল শক্ত হওয়ার কারণে এখন আগের চেয়ে বাজারে কম আসছে। এক সপ্তাহ আগেও দিনে চার-পাঁচ গাড়ি আসতো। এখন দিনে এক গাড়ি করে আসে। পাইকারি প্রতি পিস তাল ৮-১০ টাকা করে বিক্রি করি।

Advertisement

যাত্রাবাড়ী থেকে পাইকারি তাল কিনে একই এলাকার দনিয়া বাজারে নিয়ে বিক্রি করেন কালাম। মাদারীপুরের এ মৌসুমি বিক্রেতা বলেন, পাঁচ টাকা করে প্রতি পিস তাল কিনেছি, তবে আমার সাত টাকা পড়ে যাবে নিয়ে যেতে।

তিনি আরও বলেন, এখন মানুষ তাল খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে। কারণ সিজন শেষ হওয়ার পথে। এজন্য আগের চেয়ে কম করে নিয়েছি। দনিয়ায় নিয়ে খুচরা প্রতি পিস ১৫ টাকা বা তার চেয়ে একটু বেশিতে বিক্রি করবো।

তালশাঁস ক্রেতাদের কয়েকজন জানান, চলতি পথে ক্লান্তি এলে ডাবের মতো কচি তালও গলা ভিজিয়ে দেয়। শরীরকে চনমনে (চাঙ্গা) করে। বিশেষ করে যখন গরম পড়ে, তখন এই তালশাঁস টনিকের মতো কাজ করে।

এইচএআর/এমপি/জিকেএস