ভ্রমণ

দুই গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ

সিরাজগঞ্জ জেলার ঐতিহাসিক ইমারতগুলোর মধ্যে শাহজাদপুর উপজেলার ৩ শতাধিক বছরের পুরাতন বদর উদ্দিনের মসজিদটি উল্লেখযোগ্য স্থাপত্য নিদর্শন। স্থাপত্য শিল্পের দিক থেকে এর রয়েছে ভিন্নমাত্রিক গৌরব। অনুসন্ধিৎসু মন নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন শাহজাদপুর থেকে। ইতিহাস-ঐতিহ্যের দেখা পাবেন এ মসজিদে।অবস্থান ও নামকরণমসজিদটি শাহজাদপুর থানার পাশে ছয়আনিপাড়ায় অবস্থিত বলে ছয়আনিপাড়া মসজিদ নামে বেশি পরিচিত। তবে নির্মাতার নামানুসারে স্থানীয়ভাবে বদর উদ্দিনের মসজিদ নামেও খ্যাত।বৈশিষ্ট্যমসজিদটি ভূমি নকশায় আয়তাকার এবং ২ গম্বুজবিশিষ্ট ইমারত। এর বাইরের দিক থেকে দৈর্ঘ্য ৯.৩৯ মিটার এবং প্রস্থ ৬.০৭ মিটার। অভ্যন্তরের দৈর্ঘ্য ৭.৩১ মিটার এবং প্রস্থ ৩.৫৫ মিটার। মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত উচ্চতা ৫.৮৯ মিটার। মসজিদের সামনের ফাসাদে ৩টি দরজার সোজাসুজি কিবলা। দেয়ালে ৩টি মেহরাব রয়েছে। কেন্দ্রীয় মেহরাবের পেছনে কেবলা দেয়ালে বাইরের দিকে সম্প্রসারিত করা আছে। পূর্ব ফাসাদে মোট ৩টি খিলানবিশিষ্ট প্রবেশ পথ এবং পশ্চিম দেয়ালে মোট ৩টি মেহরাব আছে। উত্তর ও দক্ষিণ দেয়ালে একটি করে জালি নকশা সম্বলিত গবাক্ষ আছে। এর জুল্লা সমান ২ ভাগে বিভক্ত, কিন্তু মেহরাব এখানে ৩টি। দুটি গম্বুজ কলসচূড়া যুক্ত এবং শীর্ষদেশ পদ্মফুলের সজ্জায় অলংকৃত। এতে চতুর্কেন্দ্রিক খিলানরীতি অনুসৃত হয়েছে। মসজিদের অভ্যন্তরে দণ্ডায়মান কোনো স্তম্ভ নেই। মসজিদটি সম্পূর্ণ ছোট ছোট পাতলা ইট, চুন, সুরকি দ্বারা নির্মিত। এর কোনো মিনার নেই। ইতিহাসমসজিদে আবিষ্কৃত শীলালিখনটি সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী বিসমিল্লাহ দিয়ে আরম্ভ না করে কালেমা তাইয়েবা দিয়ে ব্যতিক্রমীভাবে লেখা শুরু হয়েছে। এই শীলালিপির ভাষা ফারসি। নির্মাতা বদর উদ্দিন তার এই শীলালিপিতে পুনরায় কালেমা তাইয়েবা লেখার রীতি প্রবর্তন করেন, যা অনেক আগেই লুপ্ত হয়ে যায়। শীলালিপির বামদিকে উপরের অংশে ৪ খলিফার নাম এবং শীলালিপি তৈরির সময় যে শাসক ছিলেন, তার নাম মোহাম্মদ শাহ উৎকীর্ণ হয়েছে। এই শীলালিপিটি সাধারণ কোনো শীলাখণ্ডে লিখিত নয়। এটা একটা বিরল টেরাকোটা ফলোকলিপি।নির্মাণকালমসজিদের পূর্ব দেয়ালের বাহিরে উৎকীর্ণ ফলকে দেখা যায়, মসজিদটি হিজরি ১১০১ সালে স্থাপিত হয় এবং তারিখযুক্ত শীলালিপিতে দেখা যায় যে, ধর্মপ্রাণ বদর উদ্দিনের প্রচেষ্টায় এ মসজিদের নির্মাণ কাজ ১১৫১ হিজরিতে সমাপ্ত হয়।এসইউ/আরআইপি

Advertisement