বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, মাঙ্কিপক্সের নতুন নামকরণের বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে তারা। এ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কাজ চলছে। এই ভাইরাস এবং এ থেকে যে রোগ সৃষ্টি হয় সে বিষয়ে ‘বৈষম্যহীন এবং অপবাদ আরোপ করে না এমন নাম দেওয়া জরুরি প্রয়োজন’ জানিয়ে গত সপ্তাহে ৩০ জন বিজ্ঞানীর লিখিত আহ্বানের পরই নতুন নামকরণের কথা জানানো হলো। খবর বিবিসির।
Advertisement
ডব্লিউএইচও বলছে, এই ভাইরাসটিকে শুরু থেকেই আফ্রিকান বলে উল্লেখ করা যথার্থ নয় এবং এটি অনেকটাই বৈষম্যমূলক। গত কয়েক সপ্তাহে বিভিন্ন দেশে মাঙ্কিপক্সে প্রায় ১ হাজার ৬শ রোগী শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া স্থানীয়ভাবে প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়া বিভিন্ন দেশে ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে যুক্তরাজ্যসহ নতুন যে ৩২ দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে সেখানে কারও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
১২ জুন পর্যন্ত ইংল্যান্ডে ৪৫২টি কেস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১২ জন স্কটল্যান্ডের, দুজন নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের এবং চারজন ওয়েলসের।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, মাঙ্কিপক্সের নতুন নামকরণের বিষয়ে তারা আগামী সপ্তাহে জরুরি বৈঠকে বসবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রস আধানম গেব্রেয়েসুস বলেন, মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব অস্বাভাবিক এবং উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে।
Advertisement
তিনি বলেন, এ কারণেই আগামী সপ্তাহে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিধিমালার অধীনে জরুরি কমিটির বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই প্রাদুর্ভাব কতটা উদ্বেগজনক এবং জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে জরুরি কী ব্যবস্থা নিতে হবে সে বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি এক বিশেষ ধরনের বসন্ত। জলবসন্ত বা গুটিবসন্তের প্রতিকার থাকলেও এই ভাইরাস এতই বিরল যে, এখনো পর্যন্ত এর নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসাপদ্ধতি জানা নেই চিকিৎসকদের।
মূলত পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার কিছু দেশে এই ভাইরাসের খোঁজ মেলে। তবে নাম ‘মাঙ্কিপক্স’ হলেও একাধিক বন্যপ্রাণির মাধ্যমে ছড়াতে পারে এই ভাইরাস। এই ভাইরাস সবচেয়ে বেশি ছড়ায় ইঁদুরের মাধ্যমে।
ভাইরাসের উপসর্গ কী কী?
Advertisement
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তদের শরীরে প্রাথমিক উপসর্গের মধ্যে আছে- জ্বর, মাথা যন্ত্রণা, পিঠ ও গায়ে ব্যথার মতো লক্ষণ। এর থেকে হতে পারে কাঁপুনি ও ক্লান্তি।
এর পাশাপাশি দেহের বিভিন্ন লসিকা গ্রন্থি ফুলে ওঠে। সঙ্গে ছোট ছোট ক্ষতচিহ্ন দেখা দিতে থাকে মুখে। ধীরে ধীরে পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে ক্ষত। বিশেষজ্ঞদের দাবি, আক্রান্ত ব্যক্তির আশেপাশে থাকা ব্যক্তির মধ্যে সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে এই ভাইরাস।
শ্বাসনালি, ক্ষতস্থান, নাক, মুখ কিংবা চোখের মাধ্যমে এই ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে সুস্থ ব্যক্তির দেহে। এমনকি আক্রান্তের ব্যবহার করা পোশাক থেকেও ছড়ায় সংক্রমণ।
টিটিএন/এএসএম