বহুল প্রত্যাশিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন (কুসিক) শুরু হয়েছে। কুমিল্লা সিটির ভোটের সঙ্গে আজ পাঁচটি পৌরসভা, চারটি উপজেলা পরিষদ এবং দেড় শতাধিক ইউনিয়ন পরিষদের ভোটও অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে) ব্যবহার করে বিরতিহীনভাবে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। সকাল থেকেই ভোটাররা কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছেন। এখনো তেমন ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। তবে কুমিল্লার বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, পুরুষের চাইতে নারী ভোটারের উপস্থিত বেশি।
Advertisement
এদিকে কুসিক নির্বাচন ঘিরে সবার দৃষ্টি এখন সেখানে। যে কোনো নির্বাচনের তুলনায় বেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে আবার কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের অধীনে বড় কোনো নির্বাচন এটি। তাই এই নির্বাচনে কোনো ধরনের ফাঁক রাখতে চাচ্ছে না নির্বাচন কমিশন।
এরপরও ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটকক্ষে পেশিশক্তি প্রদর্শনের শঙ্কা করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীও সদ্য সাবেক মেয়রের বিরুদ্ধে কালো টাকা বিতরণের অভিযোগ করেছেন।
এবার নির্বাচনে পাঁচজন মেয়রপ্রার্থী রয়েছেন। তবে মূল লড়াইটা হবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত ও বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সদ্য সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু এবং নিজাম উদ্দিন কায়সারে মধ্যে। আর সাক্কু গত দুই মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। বাকি দুজন প্রথমবারের মতো লড়াই করছেন। ফলে কুমিল্লাবাসীর মুখে এখন প্রশ্ন- সাক্কুর হ্যাটট্রিক নাকি নতুন মুখের অভিষেক।
Advertisement
রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সব কিছুই করা হয়েছে। কুমিল্লা জেলা ও পুলিশ প্রশাসন যথেষ্ট তৎপর। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো শঙ্কার কারণ নেই।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে। দায়িত্বে কেউ গাফিলতি ও অনিয়ম করলে ছাড় দেওয়া হবে না। প্রত্যেক পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
তিনি জানান, কুসিক নির্বাচনে তিন হাজার ৬০৮ জন পুলিশ সদস্য মাঠে থাকবেন। সাধারণ ও গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে থাকবেন যথাক্রমে ১৫ ও ১৬ জন করে পুলিশ। এছাড়া আনসারসহ গ্রাম পুলিশের সদস্যরাও থাকবেন।
আর পুলিশের মোবাইল ফোর্স থাকবে ২৭টি, প্রতি ওয়ার্ডে একটি। স্ট্রাইকিং ফোর্স নয়টি। রিজার্ভ ফোর্স দুটি। আর বিজিবি মোতায়েন করা হবে ১২ প্লাটুন, র্যাবের ২৭টি টিম থাকবে। এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাচনী ম্যাজিস্ট্রেট ও নয়জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন।
Advertisement
ভোটগ্রহণ কাজে নিয়োজিত থাকবেন দুই হাজার ৫৬০ জন কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে প্রিসাইডিং অফিসার ৬৪০ জন, পোলিং অফিসার ১২৮০ জন এবং সহকারী পোলিং অফিসার ৬৪০ জন।
এদিকে এরই মধ্যে কুমিল্লা সিটির বিভিন্ন পয়েন্টে ৭৫টি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। কেন্দ্রের বাইরে-ভেতরে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা।
রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার নির্বাচনে মোট ভোটার দুই লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ১৭ হাজার ৯২, পুরুষ ভোটার এক লাখ ১২ হাজার ৮২৬ জন। আর দুজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার।
মোট ১০৫টি কেন্দ্রের ৬৪০টি কক্ষে ভোটগ্রহণ হবে। মেয়র ছাড়াও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১০৬ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৩৬ জন প্রার্থী হয়েছেন।
জেএইচ/এমএস