স্বাস্থ্য

সংক্রমণ এভাবে বাড়লে হাসপাতালে জায়গা হবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘করোনার সংক্রমণের হার গত মাসেও যেখানে এক শতাংশের নিচে ছিল, সেটি বর্তমানে দুই শতাংশে উঠে গেছে। সংক্রমণ যদি এভাবে বাড়তে থাকে, আবারও হাসপাতালগুলো রোগীতে পূর্ণ হয় আসবে, জায়গা হবে না।’

Advertisement

মঙ্গলবার (১৪ জুন) বিকেলে রাজধানীর মহাখালীর আইসিডিডিআর,বি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে করোনা বেড়েছে, সেখান থেকে সংক্রমিত হয়ে রোগীরা বাংলাদেশেও ঢুকে পড়ছে। আগে আর্টিফিশিয়াল টেস্টের যে বিষয় ছিল, দেশে আসার ৪৮ ঘণ্টা আগে টেস্ট করে সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে হবে। সেটি তো আমরা এখন করছি না। শুধু ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট দেখছি। যদি অন্যান্য দেশে খুব বেশি সংক্রমণ বেড়ে যায় এবং দেশেও বাড়ে, তাহলে আবার আর্টিফিশিয়াল টেস্ট শুরু করবো।’

জাহিদ মালেক বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ আমরা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু দেশে এখন আবার করোনা বাড়ছে। গত একমাস দেশে সংক্রমণের হার ছিল শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ, এখন সেটি ২ শতাংশে উঠেছেছে। প্রতিদিন যেখানে দৈনিক ৩০-৩৫ জন রোগী শনাক্ত হচ্ছিলেন, এখন সেটি বেড়ে ১৩০-১৫০ জনে দাঁড়িয়েছে। আশঙ্কা করছি, যদি এ মুহূর্তে পরীক্ষা বাড়ানো হয়, তাহলে সংক্রমণের সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে।’

Advertisement

তিনি বলেন, ‘আমাদের জন্য একটি ভালো খবর হলো- প্রায় সব হাসপাতালে এখন ২০ জনের বেশি রোগী নেই। কিন্তু আমরা যেভাবে অসতর্ক হয়ে চলাচল করছি, হাসপাতালে রোগী বাড়তেও সময় লাগবে না। আমাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে আরও সতর্ক হতে হবে। আপনারা সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সব কাজকর্ম করবেন, এটি আমরা আশা করবো।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সংক্রমণ প্রতিরোধে আমরা বুস্টার ডোজের ক্যাম্পেইন করেছি। আমরা এখন পর্যন্ত আড়াই কোটি মানুষকে বুস্টার ডোজ দিয়েছি। এখনো অনেক মানুষ বাকি আছেন। যারা দুটি ডোজ নিয়েছেন কিন্তু বুস্টার ডোজ বাকি আছে, তারা দ্রুতই বুস্টার ডোজ নিয়ে নেবেন। তাহলে সুরক্ষিত থাকবেন।’

মাঙ্কিপক্স প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘কিছু কিছু দেশে মাঙ্কিপক্স পাওয়া গেছে। আমাদের দেশে এখনো পাওয়া যায়নি। বিমানবন্দরগুলোতে সবাই সতর্ক আছেন। তারা যদি কোনো ধরনের লক্ষণ নিয়ে কেউ এসেছেন, এমন কাউকে দেখেন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’

শিশুদের করোনার টিকা দেওয়ার প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের হাতে এখনো শিশুদের টিকা আসেনি। কবে শিশুদের টিকা দেওয়া হবে, সে সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত এখনো নেওয়া হয়নি।’

Advertisement

তবে আগামী ২৬ জুন কলেরার টিকা কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

জাহিদ মালেক বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতে গবেষণা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। দেশের স্বস্থ্যব্যবস্থাকে আরও এগিয়ে নিতে ও চিকিৎসাব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। অনেক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি এবং বাস্তবায়ন করছি। এটি চলমান প্রক্রিয়া।

অনুষ্ঠানে মুজিব শতবর্ষে গবেষণার জন্য ১০ নারীকে গবেষণা অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। তাদের প্রত্যেককে ৩৫ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। এ অ্যাওয়ার্ড প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন। মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই নারী। অ্যাওয়ার্ডের জন্য যারা আবেদন করেছেন, তাদের ৭০ শতাংশই নারী।’

তিনি আরও বলেন, ‘মেয়েরা এখন কোনো ক্ষেত্রেই পিছিয়ে নেই। রাজনীতি, স্বাস্থ্য, খেলাধুলায়ও তারা ভালো করছেন। খেলাধুলায় পুরুষদের চেয়েও তারা অনেক এগিয়েছেন। নারী ক্রিকেট টিম অনেক ভালো করছেন। নারীরা হিমালয় পর্বতেও উঠেছেন। আসা করবো তারা আরও ভালো করবেন।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, আইসিডিডিআর,বি-এর নির্বাহী পরিচালক ডা. তাহমিদ আহমেদ, বিজ্ঞানী ড. ফেরদৌসী কাদরী প্রমুখ।

এমআইএস/এএএইচ/এএসএম