কৃষি ও প্রকৃতি

যেভাবে কবুতরের বাচ্চার যত্ন নেবেন

কবুতর প্রথম ডিম পাড়ার ১৯ তম দিন বাচ্চা ফুটে। এদিন সন্ধ্যার দিকে ডিমগুলো পরীক্ষা করে দেখবেন। অনেক সময় ডিম থেকে বাচ্চা বের হতে পারে না। সে ক্ষেত্রে হাত দিয়ে খুব আলতো করে ডিমটা আস্তে আস্তে ভেঙে বাচ্চা বের করে দিতে হবে। যদি রক্ত বেশি দেখা যায় তাহলে ঐ অবস্থায় রেখে দিয়ে পরের দিন সকালে বের করতে হবে।

Advertisement

বাচ্চা ফুটার পর বাচ্চার নাভিটা এন্টিসেপটিক (ডেটল বা সেভলন) দিয়ে ধুয়ে দেওয়া ভালো। তাহলে ইনফেকসনের ঝুঁকি কমে যায়। বাচ্চা ফুটার পর পারলে প্রতিদিন বাচ্চা যেখানে থাকে সেখানে যা দেওয়া হয় অর্থাৎ ঝুট, কাপড় ম্যাট অথবা খড়কুটো এসব পরিবর্তন করতে হবে।

চার দিন পর্যন্ত দিনে অন্তত দুই থেকে তিনবার বাচ্চা ঠিক আছে কিনা পরীক্ষা করতে হবে। কারণ অনেক সময় বাচ্চা কবুতরের পায়ের নিচে পড়ে মারা যায়।

বাচ্চার পায়খানার রাস্তায় অনেক সময় মলমূত্র লেগে থাকে খুব সাবধানে তা পরিস্কার করে দিবেন। চার দিন পর্যন্ত কবুতর বাচ্চাকে পিজিয়ন মিল্ক দেয়। যদি কোনো বাচ্চাকে না খাওয়ায় তা হলে যেটাকে খাইয়েছে ঐ বাচ্চাটাকে কিছু সময়ের জন্য সরিয়ে রাখবেন। এই সময় যেই বাচ্চাটি কম খাবার পায় ওকে খাওয়াবে এবং খাওয়ানোর পর দুইটা বাচ্চা একসঙ্গে দিয়ে রাখতে হবে।

Advertisement

পঞ্চম দিন থেকে কবুতর বাচ্চাকে দানাদার খাবার দেওয়া শুরু করে। এই সময় থেকে চাইলে বাচ্চাকে অতিরিক্ত খাবার দিতে হবে সিরিঞ্জ বা ফিডার দিয়ে। কবুতর যদি ঠিক মতো খাবার দেয় বাচ্চাকে তাহলে অতিরিক্ত খাবারের দরকার নেই।

অতিরিক্ত খাবার হিসেবে পোলট্রি ফিড আধাঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে উপর থেকে পানিটা ফেলে দিবেন। তারপর ভাতের মাড়ের সঙ্গে ভালো করে গুলিয়ে নিবেন। চাইলে এর সঙ্গে ভিটামিন মিশিয়ে দিতে পারেন।

বাচ্চার প্রতি সবসময় খেয়াল রাখতে হবে। হাতে ধরে ওজন পরীক্ষা করতে হবে। যদি কবুতর উন্মুক্ত থাকে তাহলে অনেক সময় অন্য কবুতর ঠুকরিয়ে বাচ্চাকে মেরে ফেলতে পারে। তাই যখন খাবার দেওয়া হবে বাচ্চা একটু বড় হয়ে গেলে নর মাদি উভয়ই খাবার খেতে চলে আসে ঐ সময়ে বাচ্চার প্রতি বিশেষ নজর রাখতে হবে।

অনেক সময় বাচ্চার পা অবশ হয়ে যায়। মূলত ক্যালসিয়াম আর ভিটামিন ডি-এর অভাবে এমনটা হয়। এরকম হলে ক্যালসিয়াম আর ভিটামিন এ ও ডি ৮ থেকে ১০ দিন খেতে দিতে হবে।

Advertisement

যদি বাচ্চা ছোট অবস্থায় কবুতর মারা যায় বা হারিয়ে যায় তাহলে ১-৪ দিন পর্যন্ত অল্প একটু ডিমের সিদ্ধ কুসুম ভাতের মাড়ের সঙ্গে মিশিয়ে সিরিঞ্জ দিয়ে খেতে দিতে হবে। আর বাচ্চা নেকড়া দিয়ে ভালোভাবে জড়িয়ে রাখতে হবে।

সেই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে শ্বাস-প্রশ্বাসে যেন সমস্যা না হয়। এরপর থেকে নিয়ম মতো পোলট্রি ফিড দিতে হবে। এতে বাচ্চা দ্রুত বড় হয়ে যাবে। যেই পাত্রে থাকে সেই পাত্রটি প্রতিদিন পরিষ্কার করে দিতে হবে।

এমএমএফ/জেআইএম