মধু মাস জ্যৈষ্ঠের শেষে বর্ষার আগমনী বার্তা নিয়ে জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে শুক্রবার (১০ জুন) থেকে শুরু হয়েছে ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী সন্ন্যাসতলী মেলা। শনিবার (১১ জুন) সন্ধ্যায় শেষ হচ্ছে এ মেলা। তাই মেলায় ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। দূর-দূরান্ত থেকে এখানে আসেন নানা বয়সের হাজারো মানুষ।
Advertisement
ক্ষেতলাল উপজেলা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার দক্ষিণে মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর-জিয়াপুর গ্রামের তুলসীগঙ্গা নদীর কোলঘেঁষে বসে সন্ন্যাসতলীর মেলা। শনিবার মেলার দ্বিতীয় দিনে নারীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। কিনছেন ফিতা, চুড়ি ও আলতাসহ বিভিন্ন প্রসাধনী সামগ্রী।
মেলা ঘিরে এলাকার অর্ধশত গ্রামে জামাই-মেয়েসহ স্বজনদের সরব আগমন ঘটে। একদিন আগে থেকেই বিশাল এ মেলাকে কেন্দ্র করে দোকানিরা সাজিয়ে বসেছেন তাদের পসরা। এ মেলা উপলক্ষে ৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসেছিল হরেক রকম ঘুড়ি, বিভিন্ন মৌসুমি ফলমূল, মিষ্টি, হাতপাখা, মাছ শিকারের (ধরা) খৈলশানীসহ দেশীয় বিভিন্ন যন্ত্র। এছাড়া আছে সাংসারিক কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন তৈজসপত্রও।
মেলার আশপাশে বৃহৎ এলাকাজুড়ে শিশু কিশোর ও বৃদ্ধদের চলে ঘুড়ি ওড়ানোর উৎসব। তবে কোনো পুরস্কারের আয়োজন না থাকলেও বেশিরভাগই মানুষ অংশ নেন ঘুড়ি ওড়ানোর উৎসবে। কে কত উঁচুতে ঘুড়ি ওড়াতে পারেন সেই প্রতিযোগিতা চলতে থাকে।
Advertisement
জামাই-মেয়ের পাশাপাশি স্বজনদের আপ্যায়নের রীতি এলাকায় চলে আসছে এ মেলাকে ঘিরেই। স্থানীয় জিয়াপুর গ্রামের হারুনুর রশীদ, মাতাপুর গ্রামের মতিউর রহমান বলেন, আমাদের বাবা দাদারা এ মেলায় আসতেন। আমরাও মেলায় কেনাকাটা করতে আসি।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার স্বপন মন্ডল, দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা সাগর হোসেন বলেন, প্রতি বছর এ সন্ন্যাসতলী মেলায় আসি শুধু ঘুড়ি কিনতে। ঘুড়ি ছাড়াও এখানে সব ধরনের জিনিসপত্র পাওয় যায়।
সন্ন্যাসতলী মেলা কমিটির সভাপতি মন্টু চন্দ্র বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও বসেছে সন্ন্যাসতলী মেলা। এ মেলা প্রায় দুশ বছরের পুরোনো। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা মেলায় আসেন।
ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সন্ন্যাসতলী মেলার মূল আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো। মেলা ঘিরে আশপাশের জেলা থেকে অনেক মানুষের সমাগম ঘটে। মানুষের মধ্যে মিলনমেলায় পরিণত হয়।
Advertisement
রাশেদুজ্জামান/এসজে/এএসএম