নওগাঁর রানীনগরে ১০ হাজার টাকা চুরির সন্দেহে বন্ধু হযরত আলীকে (২৩) শ্বাসরোধে হত্যা করে ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখেন নাহিদ। আটকের পর হত্যার কারণ হিসিবে পুলিশকে এমন কথাই জানিয়েছেন নাহিদ হোসেন।
Advertisement
শুক্রবার (১০জুন) বিকেলে রানীনগর থানায় সংবাদ সম্মেলন করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মো. গাজিউর রহমান এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আলমারির ড্রয়ারে রাখা ১০ হাজার টাকা বন্ধু হযরত আলী চুরি করেছে বলে সন্দেহ করেন নাহিদ। এরপর ৪ জুন সকালে হযরতকে সেই টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দিলে অস্বীকার করেন হযরত। এ নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। নাহিদের কিস্তির টাকা প্রয়োজন হওয়ায় আবারও হযরতের কাছে টাকা চান নাহিদ।
ওইদিন সকাল ৯টার দিকে নাহিদের ঘরের ড্রেসিং টেবিলের সামনে চুল আঁচড়াচ্ছিলেন হযরত। এসময় নাহিদ ঘরের খাটে শুয়ে ছিলেন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই নাহিদ তার গামছা দিয়ে পেছন থেকে হযরতের গলায় পেঁচিয়ে খাটে ফেলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এ সময় হযরতের প্যান্টের পকেটে থাকা ৪ হাজার টাকা বের করে নেন নাহিদ।
Advertisement
এরপরই হযরতের মরদেহ গুমের পরিকল্পনা করেন নাহিদ। ওইদিন বিকেল ৪টার দিকে নাহিদ নিজেই তার নির্মাণাধীন একটি ঘরের মেঝেতে গর্ত করে হযরতের মরদেহ বেডসিট দিয়ে জড়িয়ে প্লাস্টিকের বস্তায় ভরেন। পরে ঝুট কাপড় দিয়ে বেঁধে পুঁতে রাখেন।
ঘাতক নাহিদ হোসেন (২৪) উপজেলার পূর্ব-বালুভরা গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। হযরত আলী একই গ্রামের জমসেদ আলীর ছেলে।
এ ঘটনায় নিহত হযরতের বাবা জমসেদ আলী বাদী হয়ে রানীনগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার পর আসামি মূলহোতা নাহিদ হোসেনকে শুক্রবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- রানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন আকন্দ, পুলিশ পরিদর্শক (ডিএসবি) নন্দিতা সরকারসহ থানা পুলিশের অন্যান্য সদস্যরা।
Advertisement
হযরত আলী কৃষি কাজের পাশাপাশি ব্যাটারিচালিত অটোচার্জার ভ্যান চালাতেন। পারিবারিক কলহের জেরে হযরত আলী নিজের বাড়িতে না থেকে গত কয়েকদিন থেকে পার্শ্ববর্তী বন্ধু নাহিদ হোসেনের বাড়িতে থাকতেন। ৩ জুন রাত ৯টার দিকে স্থানীয় একটি গ্যারেজে ভ্যানটি চার্জ দেওয়ার জন্য রেখে যান তিনি। এরপর থেকে হযরত নিখোঁজ ছিলেন। এমনকি তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে তার বাবা জমসেদ আলী ও ফুফু দেলেরা বিবি থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে পূর্ব-বালুভরা গ্রামে গিয়ে পুলিশ নাহিদকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এক পর্যায়ে তাকে হত্যা করে নাহিদ তার ঘরের মেঝেতে পুঁতে রেখেছেন বলে স্বীকার করেন। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে ঘরের মেঝে খুঁড়ে হযরত আলীর মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়।
আব্বাস আলী/এফএ/এমএস