ভ্রমণ

নীল মসজিদের টানে ইস্তাম্বুলে ছোটেন সব ধর্মের মানুষ

বিশ্বের প্রাচীন নগরীগুলোর মধ্যে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহর একটি। সেখানকার অসংখ্য স্থাপনার মধ্যে বিশেষ আকর্ষণ ব্লু মস্ক বা নীল মসজিদ।

Advertisement

বিস্ময়কর এই মসজিদের স্থাপত্য ও নির্মাণশৈলী দেখে বিশ্ববাসী অবাক হয়ে যান। এ কারণে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব ধরনের পর্যটকই ইস্তাম্বুলের নীল মসজিদ দেখতে ভিড় করেন।

অটোমান ও বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের রাজধানী হিসেবে পরিচিত ইস্তাম্বুলের এই মসজিদের প্রকৃত নাম ‘সুলতান আহমেদ মসজিদ’। সেখানে প্রবেশের গেটটি ব্রোঞ্জের তৈরি।

নীল মসজিদের ৬টি মিনার, এর অভ্যন্তরীণ সজ্জা ও আলোকসজ্জা সবার নজর কাড়ে। মসজিদের অভ্যন্তরে নীল রঙের প্রাধান্য থাকায় এটি নীল মসজিদ নামেই বেশি পরিচিত।

Advertisement

সুলতান আহমেদ মসজিদ, ইস্তাম্বুলের আকাশরেখার অন্যতম আকর্ষণীয় অংশ। একই সঙ্গে ইস্তাম্বুলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতীকগুলোর মধ্যে একটি। নীল মসজিদের অনেক স্বাতন্ত্র্যসূচক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা একে অন্য মসজিদ থেকে আলাদা করেছে।

এই মসজিদ ১৬০৯-১৬১৬ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে উসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতান আহমেদ বখতি নির্মাণ করেন। মসজিদ কমপ্লেক্সে একটি মাদরাসা, একটি পান্থনিবাস ও প্রতিষ্ঠাতার সমাধি অবস্থিত।

তখনকার সময়েও স্থাপত্য কলা ও মানুষের রুচিবোধ কতটা উন্নত ছিল তা এই মসজিদ দেখলেই অনুমান করা যায়। প্রতিবছর প্রায় ৫-৬ মিলিয়ন পর্যটক মসজিদটি দেখতে যান। এর মধ্যে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়া থেকে শুরু করে সব ধরনের ধর্মের মানুষ আসেন।

সেখানে প্রবেশ করতে কোনো টাকা লাগবে না। তবে মসজিদ পরিদর্শন করতে ড্রেস কোড মানতে হবে। সেখানে প্রবেশ করতে পুরুষদের অবশ্যই লম্বা প্যান্ট ও নারীদের মাথা ও কাধ ঢাকা থাকতে হবে। প্রত্যেককে অবশ্যই জুতা খুলে ফেলতে হবে।

Advertisement

সেখানে জুতা রাখারা জায়গা আছে। আবার নিজের ব্যাগেও রাখা যাবে। সেখানে ফ্ল্যাশ ফটোগ্রাফি ও উচ্চস্বরে কথা বলা এড়িয়ে চলতে হবে। মসজিদে প্রার্থনাকারীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয়।

এই মসজিদে নামাজের জন্য যেমন মুসল্লিরা জড়ো হন; ঠিক তেমনই পর্যটকরাও ভিড় করেন। এটি ইস্তাম্বুলের অন্যতম জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান। তবে নামাজের সময় পর্যটকদের জন্য বন্ধ থাকে মসজিদ।

সকাল ৯টা থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর এক ঘণ্টা পর্যন্ত খোলা থাকে। প্রতিবার নামাজের সময় ৯০ মিনিট ও শুক্রবার দুপুরের নামাজের সময় ২ ঘণ্টা বন্ধ থাকে মসজিদ।

সেখানে যাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো নগরীর সুলতানহমেটে ট্রামে ওঠা। যেখান থেকে মসজিদটির দুরত্ব ২ মিনিটের।

নীল মসজিদ থেকে হায়া সোফিয়াও মাত্র ২ মিনিটের পথ। এ ছাড়া একই স্থানে সুলতান সুলেমানের প্রাসাদও দেখতে পাবেন। সে বিষয়ে বিস্তারিত আরেকটি লেখায় বর্ণনা করা হবে।

এইচএস/জেএমএস/এসইউ/জিকেএস