সাহিত্য

হ্রদের ধারে ভোরের সাথে ও অন্যান্য কবিতা

হ্রদের ধারে ভোরের সাথে

Advertisement

মে আর জুন মাসে কৃষ্ণচূড়া ফোটেনিঃশব্দে বাগানের মধ্য দিয়ে হ্রদের দিকে হাঁটামে’র মাঝামাঝি গরমের ঝাঁজতীরে সাদা ফেনাযুক্ত ঢেউয়ের দিকে তাকিয়েআমি ভোরের সাথে দাঁড়িয়ে আছি।

একটি কাঠের বেঞ্চে কাগজ আর কলম নিয়ে বসলামমৃদু স্রোতে রাজহাঁসের গানমিষ্টি বাতাস, কিছু পায়রা উড়ে যাচ্ছে।

বাতাসে ঝড় উঠতে শুরু করলে উঠে বসলাম একটি ব্যাগে কলম এবং কাগজ রেখেনীরবে সরু রাস্তায় ফিরে যাই।

Advertisement

হলুদ ভোরের ছোঁয়া, রাজহাঁসের গান, হ্রদের স্রোত...একজন অর্বাচীন লোকের হেঁটে যাওয়ার সময় আমি হেসে দিলামএই ভোরের সাথে চোখের সুখ ক্ষণস্থায়ী হয়।

****

২.ভালোবাসার সময়

আমি যখন ভালোবাসিমনে হয় আমিই সেই সময়ের রাজাআমিই পৃথিবী এবং পৃথিবীর সবকিছুর অধিকারীকোনো কুচপরোয়া নেই।

Advertisement

আমি যখন ভালোবাসিআমি চোখের অদৃশ্য অধরা আলো হয়ে যাইকখনো বা আমার নোটবুকের কবিতাকখনো বা বান্দরবানের সবুজ ঢেউকিংবা গঙ্গামতীর প্রথম সূর্য হয়ে যাই।

আমি যখন ভালোবাসিআমার দৃষ্টিতে তীক্ষ্মতা বেড়ে যায় আমার শরীরে সমস্ত শক্তি জড়ো হয়—ড্রাগনের মতো।

যখন আমি ভালোবাসি, রাজা হয়ে যাই।

****

৩. ঝরাপাতার উপলব্ধি

প্রবাদ বলে, ‘বুড়ো পাতা ঝরে গেলে কচি পাতা হাসে’।যখন পাথুরে স্রোতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিকাঁদছি আর কাঁদছি;বাতাস আমাকে ফ্লার্টিং দিয়ে নিচে টানছেআমি শাখাকে জিজ্ঞাসা করি, আমি কি তোমাকেআরও কিছুক্ষণ আলিঙ্গন করতে পারি?আমি কি ছিটকে পড়া চাঁদের আলোয় নাচিনি?তোমার কি মনে পড়ে না সবুজতা, ছায়ার কথাআর গরম থেকে প্রশান্তি দেওয়ার কথা?

কিন্তু এখন আমি ঝরে-পড়া পাতাঘুম ছাড়া স্বপ্ন দেখা, পায়ের পাতা ছাড়া নাচের মতোদিবাস্বপ্ন দেখছি!—উপলব্ধি এমন!চাঁদ আর তারারা গুনগুন করছেশাখা-প্রশাখায় ফুল ফুটেছেচাঁদ আমার দিকে চোখ বুলিয়ে নিচ্ছে,আর আমি চাঁদের আলোয় গলে যাচ্ছি।

ঝরাপাতাটি আফসোসের সুরে বলে,‘মানুষের ভাগ্যও এমন হবে কিন্তু—যৌবনকে পরিকল্পিত কাজে লাগানোই হবে জ্ঞানীর কাজ।’

এসইউ/এএসএম