যশোর রেলস্টেশনে রেলওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে ভারতফেরত যাত্রীকে আটকে রেখে হয়রানি, মালামাল লুট ও চাঁদাবাজি অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। বুধবার (৮ জুন) অভিযোগ তদন্তে এসে এর সত্যতা পান খুলনা রেলওয়ের সহকারী পুলিশ সুপার (কুষ্টিয়া সার্কেল) মজনুর রহমান।
Advertisement
রোববার (৫ জুন) রাতে যশোর রেলওয়ে স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। হয়রানির শিকার টি এম রাশিদুল হাসান সিরাজগঞ্জের সালঙ্গা থানার ধুপিল মেহমানশাহী গ্রামের বাসিন্দা ও ঢাকা তেজগাঁও কলেজের মাস্টার্সের ছাত্র। ঘটনার পরদিন জিআরপি পুলিশ হেডকোয়ার্টারে অভিযোগ করেন তিনি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার দুপুরে তদন্তে যশোর রেলওয়ে স্টেশনে আসেন সহকারী পুলিশ সুপার মজনুর রহমান। ঘটনার শিকার রাশিদুল হাসানও সিরাজগঞ্জ থেকে যশোরে আসেন। তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার মজনুর রহমান ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। এ সময় তিনি ভুক্তভোগীসহ স্টেশন মাস্টার আয়নাল হাসান, রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী, জিআরপি ফাঁড়ি ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম, ফাঁড়ির কনস্টেবল এবং স্টেশনের বিভিন্ন দোকানের দোকানিদের সঙ্গে কথা বলেন। একই সঙ্গে অভিযুক্ত কনস্টেবলদেরও জবানবন্দি নেন তিনি।
অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে সহকারী পুলিশ সুপার মজনুর রহমান বলেন, তিনি পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখছেন। বিস্তারিত প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া হবে। এরপর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
রাশিদুল হাসানের অভিযোগ, রোববার তিনি ভারত থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করেন। এরপর বাসযোগে রাত ৮টার দিকে যশোর স্টেশনে আসেন সুন্দরবন এক্সপ্রেসে করে বাড়ি (সিরাজগঞ্জ) যাওয়ার জন্য। স্টেশনে অবস্থান করার সময় রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) কনস্টেবল আবু বক্কর ও আলআমিনসহ সাদাপোশাকধারী আরও তিনজন তার ব্যাগ তল্লাশির নামে ফাঁড়িতে নিয়ে যান।
Advertisement
সেখানে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রেখে ভারত থেকে আনা পোশাক, প্রসাধনীসহ প্রায় ১৫ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে নেন। পরে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিকাশের মাধ্যমে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে সাদা কাগজে সই নেন। এরপর রাত দেড়টার দিকে তাকে ছেড়ে দেন। পরে বাধ্য হয়ে প্রাইভেটকার ভাড়া করে বাড়িতে ফেরেন রাশিদুল।
রাশিদুল জানান, রেলওয়ে পুলিশের মালামাল লুট ও চাঁদাবাজির বিষয়ে তিনি ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন। পরে রেলওয়ে পুলিশের হেডকোয়ার্টারে এসপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) বরাবর অভিযোগ করেন।
তিনি আরও জানান, ওই রাতে তিনি যে বিকাশ নম্বরে টাকা দিয়েছেন তার স্ক্রিনশট, গোপনে পুলিশ কনস্টেবলদের তোলা ছবি ও ভিডিও অভিযোগের সঙ্গে সংযুক্ত করেছেন। ঘটনার সময় স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করলেও তার অভিযোগের সত্যতা মিলবে বলেও দাবি করেন রাশিদুল।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ কনস্টেবল আবু বক্কর বলেন, ওই রাতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। তারা কোনো যাত্রীকে তল্লাশি করেননি।
Advertisement
মিলন রহমান/এসআর/জিকেএস