জাতীয়

ডিপোতে আগুন লাগার পরও স্ত্রীর সঙ্গে ভিডিওকলে কথা বলেছিলেন মাসুদ

‘চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে আগুন লাগার পর কনটেইনার সরাতে গিয়ে দগ্ধ হন মাসুদ রানা (৩৭)। ঘটনার দিন (৪ জুন) নাইট ডিউটি ছিল মাসুদ রানা। মাসুদ আরএফএস অপারেটর ছিল। আগুন লাগার পর স্ত্রীর সঙ্গে ভিডিওকলে কথা বলেছিলেন মাসুদ রানা।’

Advertisement

বুধবার (৮ জুন) চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সামনে এভাবেই কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন নিহত মাসুদ রানার সহকর্মী আবদুল্লাহ আল মামুন। ঘটনার চারদিন বুধবার ভোর ৪টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তার মৃত্যু হয়।

আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, শনিবার নাইট ডিউটি ছিল মাসুদ রানা। সে আরএফএস অপারেটর ছিল। আগুন লাগার পর নিজেও ভিডিওকলে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন। এর পর লিফট ক্রেন দিয়ে খালি কনটেইনার সরাচ্ছিলেন। হঠাৎ বিস্ফোরণে পুরো শরীর ঝলসে যায় তার। শরীরের পেছনে পুরোটাই পুড়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, মাসুদ রানা সুঠাম দেহী এবং শান্ত প্রকৃতির ছিল। তার ছোট দুটি সন্তান রয়েছে।

Advertisement

চমেক হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি কেয়ারে অপেক্ষমান মাসুদ রানার স্ত্রী সুমি বলেন, আগুন লাগার পর ফোন করেছিলেন। ডিউটি আছে বলে তাড়াতাড়ি মোবাইলের লাইন কেটে দেন। পরে শুনি বিস্ফোরণে আমার স্বামী পুড়ে গেছেন।

এর আগে শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। আগুন লাগার পর রাসায়নিকের কনটেইনারে একের পর এক বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটতে থাকলে বহুদূর পর্যন্ত কেঁপে ওঠে।

অগ্নিকাণ্ড ও ভয়াবহ এ বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ জনে দাঁড়িয়েছে। দগ্ধ ও আহত ১৬৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাতেই শনাক্ত হওয়া নিহতদের জেলা প্রশাসনের সহায়তায় পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াস হোসেন চৌধুরী জানান, নিহতদের মধ্যে ডিপোর শ্রমিকদের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের ৯ সদস্যও রয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে।

Advertisement

ইকবাল হোসেন/এমএএইচ/এএসএম