চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোতে দুর্ঘটনার সময় কনটেইনার ছিল চার হাজার ৩১৩টি। এরমধ্যে পণ্যভর্তি ছিল শতাধিক কনটেইনার, যার মধ্যে অন্তত ২৭টিতে ছিল কেমিক্যাল। এরমধ্যে বিস্ফোরণে ১৫টি ভ্যানিশ (পুরোপুরি ধ্বংস) হয়ে গেছে। বাকি ১২টি কনটেইনার নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হলেও সেগুলো এখনো ঝুঁকিপূর্ণ।
Advertisement
ফায়ার সার্ভিস বলছে, আগুন দেখা না গেলেও কনটেইনারগুলো এখনো পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত বলা যাবে না। শুরুতে এগুলো গরম হয়েই আগুন লেগেছিল। আগুন নিয়ন্ত্রণের পর যেহেতু কনটেইনারগুলো এখনো কিছুটা গরম, এজন্য যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
মঙ্গলবার (৭ জুন) দুপুরে ঘটনাস্থলে ব্রিফিং করেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক আনিসুর রহমান। তিনি এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, ‘কনটেইনারে কেমিক্যাল থাকার বিষয়টি মালিকপক্ষ এখনো আমাদের নিশ্চিত করতে পারেনি। আমরা ঝুঁকিপূর্ণ কনটেইনার সরাতে বলেছি। কাজ করতে গিয়ে যদি কনটেইনারের ভেতরে আগুন থাকে, তাহলে যতই বাইরে থেকে ফাইটিং করি তাতে কোনো লাভ হবে না। কনটেইনার ঠান্ডা না করলে যদি পরিমিত তাপ থেকে যায়, তাহলে ফের বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। সব দিক চিন্তা করে আমরা কাজ করছি।’
Advertisement
কনটেইনার সরানোর ব্যাপারে সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ টিম আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কেমিক্যাল সরাতে গেলেও বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি আছে। এখানে কেমিক্যাল, গার্মেন্টস অ্যাক্সেসরিজ আছে। ফিনিশড গুডস জাতীয় বিভিন্ন পণ্য রয়েছে। যেগুলো আগুনের জন্য অত্যন্ত সহায়ক। মালিকপক্ষকে বলা হয়েছে, সেগুলো যেন দ্রুত রিমুভ (সরানো) করা হয়। যাতে আবার দুর্ঘটনা না ঘটে।’
ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত মর্মাহত, যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। ফায়ার সার্ভিসের ইতিহাসে এটা নজিরবিহীন। শুধু ফায়ার সার্ভিস পরিবারের সদস্য নয়, আমাদের জাতি অত্যন্ত মর্মাহত। আমরা মূলত ৪ জুন রাত ৯টা ১৫ মিনিটে অগ্নিকাণ্ডে খবর পাই। খবর পাওয়ার পরপরই আমাদের নিকটস্থ কুমিরা ও সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। তখন দুটি কনটেইনারের মধ্যে আগুন সীমাবদ্ধ ছিল। তারা সাধারণ আগুন মনে করে ফায়ার ফাইটিং করছিল।’
‘ডিপো কর্তৃপক্ষ কোনো তথ্য দেয়নি যে কনটেইনারে হাইড্রোজেন পার অক্সাইডি বা দাহ্য পদার্থ আছে, যা যেকোনো সময় বিস্ফোরিত হতে পারে। মালিকপক্ষের সহযোগিতার অভাবে তাৎক্ষণিক আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করতে গিয়ে কুমিরা ও সীতাকুণ্ডের আমাদের জনবল, অফিসার এবং গাড়ি সবই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে’ বলে উল্লেখ করেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক আনিসুর রহমান।
টিটি/এএএইচ/এমএস
Advertisement