সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৩ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ। নিহতদের মধ্যে ২৬ জনের মরদেহ শনাক্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
Advertisement
আজ মূল অগ্নিকাণ্ডের স্থান থেকে আরও দুটি মরদেহ শনাক্ত করেছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স।
মঙ্গলবার (৭ জুন) দুপুরে আগুন নিয়ন্ত্রণের পর ডিপোর বাইরে এসে জাগো নিউজকে এ তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিসের কর্মী মো. আল আমিন।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১৫ ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও ১০ পুলিশ সদস্যসহ মোট ২৩০ জন আহত হয়েছেন। তারা বর্তমানে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
Advertisement
ফায়ার সার্ভিস বলছে, অগ্নিকাণ্ডের ৬১ ঘণ্টা পর তা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। অগ্নিকাণ্ডের স্থান থেকে দুটি মরদেহ শনাক্তসহ বেশ কয়েকজনের হাড় উদ্ধার করা হয়েছে।
এ নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী আল আমিন বলেন, আজ বেলা ১২টা ৭ মিনিটের দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মরদেহ আনার জন্য দুটি ব্যাগ নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। অগ্নিকাণ্ডের স্থান থেকে মরদেহ শনাক্ত করার কাজ এখনো চলছে। অনেক জায়গায় হাড় পড়ে আছে। সেগুলো সংগ্রহ করে ডিএনএ পরীক্ষা করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এর আগে, সোমবার (৬ জুন) রাত ১০টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি বড় ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এরই মধ্যে চারটি কেমিক্যালযুক্ত কনটেইনার নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
তবে ফায়ার সার্ভিস বলছে, সরিয়ে নেওয়া কনটেইনারগুলোরও পরবর্তীতে বিস্ফোরণের আশঙ্কা রয়েছে। এখন কেমিক্যালযুক্ত কনটেইনার নিয়ে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের বিশেষজ্ঞ ইউনিট।
Advertisement
এর আগে, সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। ঘটনার পর এ নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত তিন প্রতিষ্ঠান চার রকম তথ্য দেয়। রোববার (৫ জুন) রাতে দেওয়া তথ্য পরদিন সকালে সংশোধন করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
রোববার বিকেল ৫টায় চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াস চৌধুরী জানান, মৃতের সংখ্যা ৪৯ জন। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান জানান, মৃতের সংখ্যা ৪৬ জন। এরও পরে, রাত ৯টায় জেলা প্রশাসনের নোটিশ বোর্ডেও জানানো হয় মৃতের সংখ্যা ৪৬।
কিন্তু সোমবার (৬ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান জানান, মৃতের সংখ্যা ৪১ জন।
তবে এর আগেই সোমবার সকালে জেলা প্রশাসন নোটিশ বোর্ড সংশোধন করে মৃতের সংখ্যা ৪১ জন বলে জানায়।
শনিবার রাত ১০টার পর আগুনের খবর ছড়িয়ে পড়ে। রাত ১২টার পর থেকে মৃতের খবর আসতে থাকে। সময় যত গড়াতে থাকে, মৃতের সংখ্যাও তত বাড়তে থাকে।
এমপি/এমএস