বেশ কিছু দিন ধরে বাংলাদেশের ক্রিকেটে একটি বিষয় লক্ষ্যণীয়। তা হলো প্রায় প্রতিটি সিরিজের আগে মাঠের বাইরের কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা হঠাৎই মূল আলোচ্য বিষয় হয়ে যাচ্ছে। এবারও হয়েছে। টেস্ট অধিনায়ক হওয়ার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আগে সাকিবের মিডিয়ায় কথা না বলে নিরবে দেশ ছাড়া রীতিমতো সাড়া জাগানো ঘটনা।
Advertisement
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের দুটি ভিন্ন ইস্যু। এক, তার ওপেনিং থেকে নিচে নেমে চার নম্বরে ব্যাটিং করা বিতর্ক, সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলা প্রসঙ্গে তামিম ইকবাল ও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের বিপরীতমুখি ভাষ্য। যথারীতি তা নিয়ে ক্রিকেট পাড়ায় তোলপাড়।
এদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ দরজায় কড়া নাড়ছে। মাত্র ৮ দিন পর অ্যান্টিগায় শুরু প্রথম টেস্ট। ওপরের একটি ঘটনায় তামিম ও বিসিবি সভাপতি পাপনের বক্তব্য দুরকম।
আর প্রথম ঘটনায় তামিমের চোখে খলনায়ক আসলে সেই প্রশ্নকর্তা সাংবাদিক, যিনি ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্সের কাছে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, বাংলাদেশের ব্যাটিং ঘাটতি পেষাতে ওপরের দিক থেকে অভিজ্ঞদের খানিক নিচে নামিয়ে খেলালে কেমন হয়?
Advertisement
ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স উত্তর দিতে গিয়ে উদাহরণস্বরুপ তামিমের ইকবালের নাম বলেন। তিনি উত্তরে বলেছেন, তাহলে তো ভালোই হয়। তামিম চার নম্বরে খেললে ভালো হবে। তবে এখন যেহেতু ওপেনার সংকট, তাই তামিমকে মিডল অর্ডারে খেলানোর সুযোগ নেই।
প্রায় দেড় দশক জাতীয় দলের হয়ে খেলার পর তামিমের কেন মিডল অর্ডারে খেলতে হবে? কী কারণ? এসব ব্যাখ্যা অবশ্য দেননি জেমি। তবে তামিম পুরো বিষয়ে খুব চটেছেন। রাগে ক্ষোভে অমন প্রশ্নকেই ‘স্টুপিড’ বলে অভিহিত করেছেন।
তবে ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স কেন তাকে মিডল অর্ডারে খেলাতে চেয়েছেন? তা নিয়ে ক্ষোভ বা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত বহু দূরে, তামিম এর ধারে কাছে দিয়েও যাননি। জেমি সম্পর্কে একটি কথাও বের হয়নি তামিমের মুখ থেকে।
তামিম মুখ ফুটে কিছু না বললেও টিম বাংলাদেশ ম্যানেজমেন্টের অন্যতম থিংক ট্যাংক খালেদ মাহমুদ সুজন এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে জাগো নিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপে সুজন রীতিমত জেমিকে এক হাত নিয়েছেন।
Advertisement
টিম ডিরেক্টরের সোজাসাপটা কথা, ‘জেমি সিডন্সের মত অভিজ্ঞ কোচের এমন উত্তর দেয়া বা ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে অমন মন্তব্য করা মোটেও ঠিক হয়নি। তামিম নিজে কি মিডল অর্ডারে খেলতে ইচ্ছুক কি না সেটা না জেনে, তার সঙ্গে কথা না বলে মিডিয়ায় অমন মন্তব্য করা একদমই ঠিক হয়নি।’
সুজন যোগ করেন, ‘তামিম ওপেনার হিসেবে ১৫ বছর জাতীয় দলে খেলে ফেলেছে। ঐ পজিশনে তার চেয়ে সফল আর কেউ নেই। তাকে হুট করে চারে নামিয়ে আনার চিন্তা কেন? সেটা করার আগে তামিমের সঙ্গে তো আলাপ করতে হবে। আমার জানা মতে সে সব কিছুই হয়নি।’
সুজনের শেষ কথা কথা, ‘এটি একান্তই সিডন্সের মন্তব্য। এর সঙ্গে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের কোনো সম্পর্ক নেই। এটা নিয়ে ভাবারও কিছু নেই। তামিম দেশের এক নম্বর ওপেনার। তাকে সেখান থেকে সরানোর প্রশ্নই আসে না। টিম ম্যানেজমেন্টের চিন্তায় ওসব নেই।’
এআরবি/এসএএস/জেআইএম