অর্থনীতি

বিএমবি`র প্রস্তাবের সমালোচনা অপ্রত্যাশিত

সম্প্রতি মার্জিন ঋণ খেলাপীদের তালিকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সিআইবিতে অর্ন্তভূক্ত করার বিষয়ে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) যে প্রস্তাব করেছে তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা হচ্ছে। যা খুবই অপ্রত্যাশিত বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি তানজিল চৌধুরী।বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তানজিল চৌধুরী বলেন, পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না। সম্প্রতি মার্জিন ঋণ খেলাপীদের তালিকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সিআইবিতে অর্ন্তভূক্ত করার বিষয়ে বিএমবিএ পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে প্রাথমিক প্রস্তাব দেয়। এর ফলে সম্প্রতি পুঁজিবাজারে নেতিবাচক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে বাজার সংশ্লিষ্টরা বিভিন্ন মহলে আলোচনা সমালোচনা করেছেন। যা আমাদের কাছে খুবই অপ্রত্যাশিত।তিনি আরও বলেন, ‘সিআিইবি রিপোর্টে অন্তুভূক্তির বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে, অনেকে বলেছেন এ কারণে মার্কেটে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কিন্তু প্রস্তাবটা শুধুমাত্র আলোচনার জন্য বিএসইসি’র কাছে দেওয়া হয়েছে। মার্কেটে প্রভাব ফেলাবার জন্য দেওয়া হয়নি। সিআইবিতে মার্জিন ঋণ খেলাপীদের তথ্য অর্ন্তভূক্তির কথা বলা হয়েছে যেভাবে বলা হয়েছে সেভাবে নয়। এটা আসলে মার্চেন্ট ব্যাংকের স্বচ্ছতার জন্য। এই প্রস্তাব ইসি কমিটির সঙ্গে আলোচনা করেই দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া এ প্রস্তাব চূড়ান্ত না। আমরা শুধু প্রস্তাব দিয়েছি। এখন বিএসইসি`র সাথে এটা নিয়ে আলোচনা করবো। যদি এ প্রস্তাব বাজারের জন্য নেতিবাচক মনে হয় তবে আমরা আর এগোবো না।’সংবাদ সম্মেলনে বিএমবিএর দ্বিতীয় সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান বলেন, আমার মতে, এটার কারণে বাজারে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। সিআইবি এর বিষয়ে একেক জন একেকটা মনে করতে পারে।গত ২৩ নভেম্বর পুঁজিবাজারে যেসব বিনিয়োগকারী এক কোটি টাকা মার্জিন ঋণখেলাপী তাদের তালিকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে (সিআইবি) অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ)। জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবিতে ব্যাংকিং ও নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণগ্রহীতাদের তথ্য সংরক্ষিত থাকে। কিন্তু মার্চেন্ট ব্যাংকে যারা মার্জিন ঋণখেলাপী, তাদের তথ্য সিআইবিতে সংরক্ষিত থাকে না। ফলে মার্জিন ঋণখেলাপী গ্রাহক একাধিক মার্চেন্ট ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারেন তথ্য গোপন করে। এ প্রবণতা ঠেকাতে এবং বর্তমানে বিপুল পরিমাণ বকেয়া মার্জিন ঋণের চাপে বিপর্যস্ত মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো বাধ্য হয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। এর ফলে ঋণখেলাপীরা পরবর্তী সময়ে নতুন করে লোনের আবেদন করতে গেলে তাদের সিআইবি ছাড়পত্র লাগবে। সিআইবি ছাড়পত্রে কেউ ঋণখেলাপী থাকলে তিনি নতুন করে মার্জিন ঋণ নিতে পারবেন না। একই সঙ্গে ঋণখেলাপী ব্যক্তি দেশের কোনো ব্যাংক বা নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিতে পারবেন না। ঋণখেলাপী বিনিয়োগকারী কোনো কোম্পানির পরিচালক হলে তার প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে আসার অনুমতি পাবে না। তিনি তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালক হলে ওই কোম্পানি পুনঃগণপ্রস্তাব (আরপিও) বা রাইট শেয়ার ছাড়তে পারবে না।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএমবিএ’র মহাসচিব ও আইসিবি ক্যাপিটালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মশিউর রহমান ও বিএমবিএর সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ এ হাফিজ।

Advertisement