পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক বলেছেন, পুলিশ বাহিনীর কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে কর্তৃপক্ষ তা কোনো অবস্থাতেই হালকা করে দেখে না। রোববার দুপুর দেড়টায় পুলিশ সদর দফতরে পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।আইজিপি বলেন, গত ৫ বছরে মোট ৭০৯ জন পুলিশ সদস্যের বিরেুদ্ধে বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ২৯৩ জন পুলিশ সদস্য বিচার বিভাগীয় শাস্তির বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে আপিল করে দণ্ড থেকে অব্যাহতি পেয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, শৃঙ্খলার বিষয়ে পুলিশ একটুও ছাড় দেয় না। তিনি আরো বলেন, পুলিশের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থায় কোনো পুলিশের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে সাজাপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালসহ বিজ্ঞ আদালতে আপিল করতে পারেন। আইজিপি বলেন, ‘আমরা স্বীকার করি অল্প কিছু পুলিশ সদস্যের অপেশাদার আচরণ ও নৈতিক স্খলন পুরো বাহিনীর অনেক বড় বড় অর্জনকে কখনও কখনও ম্লান করে দেওয়ার উপক্রম করে। আমরা আবারো বলছি শৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। ব্যক্তি পুলিশের দায় বাংলাদেশ পুলিশ কখনো নেয় না। পুলিশের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অনুসন্ধান করে কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়ে থাকে। ৭০৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কোন কোন কারণে বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল; সাংবাদিকের করা এক প্রশ্নের জবাবে একেএম শহীদুল হক বলেন, নৈতিক স্খলন, আইন অমান্য করা, আইনের সীমার অতিরিক্ত প্রয়োগের চেষ্টা, অনুমতি ছাড়া ছুটি কাটানো, সাধারণের সঙ্গে অসদাচরণ ইত্যাদি কারণে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।একই প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, কোনো পুলিশ সদস্য অযথা কাউকে হয়রানি কিংবা মারধর করতে পারে না। কোনো ঘটনায় কেউ আটক হলে আটক ব্যক্তির পরিবারকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেয়া অথবা অপরাধের ধরণ অনুযায়ী মামলা করা হয়। মারধর কোনো ভাবেই সমীচীন নয়। পুলিশের মুষ্টিমেয় কিছু সদস্যের অপেশাদার ও অসদাচরণ দিয়ে গোটা বাহিনীকে বিচার করা কতোটুকু সমীচীন সে বিষয়ে বিচারের ভার সাংবাদিক ও দেশবাসীর বিবেকের ওপর ছেড়ে দিয়ে একেএম শহীদুল হক বলেন, সাংবাদিকদের অনুরোধ পুলিশের বিরুপ সমালোচনা করার আগে পুলিশের কর্ম পরিবেশ, যানবাহন, সরঞ্জাম সীমাবদ্ধতা, কর্মঘণ্টা, বৈরি আবহাওয়া, জনতা ও পুলিশের অসম অনুপাত ও নাগরিকগণ কর্তৃক পুলিশকে সহায়তার বিষয়গুলো বিবেচনা করবেন। ব্যক্তি পুলিশের দায়ে সমগ্র পুলিশকে অভিযুক্ত করলে নিরাপত্তা ও সেবার জন্য নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা নিরুৎসাহিত হতে পারে, তাদের ভেতরে হতাশা জন্ম নিতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। আইজিপি বলেন, জঙ্গিবাদ দমনে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া সকল ক্ষেত্রেই পুলিশ সফল হয়েছে। কিছু ঘটনা প্রতিরোধ করা না গেলেও সংঘটিত সব ঘটনার তদন্ত ও উদঘাটন দ্রুত সময়ে করা সম্ভব হয়েছে। ২০১৫ সাল ও এর আগে এমন কোনা জঙ্গি ঘটনা নেই যা উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। জঙ্গিবাদ মোকাবেলার বিষয়টি শুধু পুলিশি কার্যক্রমের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বৃহত্তর পরিসরে কাজ শুরু করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন একেএম শহীদুল হক।জেইউ/এমএএস/একে/পিআর
Advertisement