অর্থনীতি

দেশে বহুমাত্রিক বৈষম্য বাড়ছে: ড. মসিউর

প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেছেন, দেশে বহুমাত্রিক বৈষম্য বাড়ছে। সুপেয় পানির ঘাটতি, পর্যাপ্ত স্যনিটেশন বা অন্য সুযোগ-সুবিধায় পিছিয়ে পড়ছে বিশেষ কিছু জনগোষ্ঠী। এ শ্রেণির উন্নয়নে কার্যক্রম শক্তিশালী করা হচ্ছে। এজন্য অর্থনীতিকেও বহুস্তর বিশিষ্ট হতে হবে।

Advertisement

সোমবার (৬ জুন) রাজধানীর বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সম্মেলন কক্ষে “বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিধারা: সুবর্ণজয়ন্তীতে ফিরে দেখা” শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. মসিউর রহমান বলেন, বিনিয়োগ যতটা হতাশাজনক বলা হয় পরিস্থিতি ততটা হতাশাজনক নয়। চীনের তুলনায় একটু কম হলেও অন্য প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় স্বস্তিদায়ক অবস্থানে বাংলাদেশ। শ্রমিকের উৎপাদনশীলতা বেড়েছে মূলত ক্যাপিটাল ইনপুট বাড়ার কারণে। তবে কৃষিখাতে মৌসুমি শ্রমিকের ঘাটতি রয়েছে। এজন্য কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের প্রসার ঘটানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, কর্মসংস্থানের রূপান্তরের ক্ষেত্রে দক্ষতা ঘাটতি রয়েছে। বিশেষত গ্রাম থেকে শহরে যাদের কর্মসংস্থান হচ্ছে তাদের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ ও দক্ষতার বেশ ঘাটতি রয়েছে। এক্ষেত্রে দেশে চলমান দক্ষতা উন্নয়ন প্রকলগুলোর গতিহীনতা রয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমরা যেসব প্রকাশনা বা বই বের করি তা যেন সহজবোধ্য হয়। সাধারণ মানুষ যেন বুঝতে পারে। বাংলায় অর্থনীতি নিয়ে এসব প্রকাশনা যত হবে সাধারণ মানুষ তত উপকৃত হবে। আমাদের সরকারের একটাই লক্ষ্য, সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন ও দারিদ্য দূর করা। এজন্য সব কিছু করা হবে। এজন্য আরও বেশি বেশি বই প্রকাশনা ও গবেষণা দরকার। আপনারা এসব বই আরও বেশি প্রকাশ করুন। তাহলে সঠিক পদক্ষেপ নিতে আমাদের জন্য সহায়ক হবে।

Advertisement

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেশে বহুমাত্রিক বৈষম্য প্রকট হচ্ছে। এটা দূর করা জরুরি। উৎপাদন ও রপ্তানি খাতে এ বৈষম্য আছে। দেশের মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো এ বৈষম্য আর দেখতে চায় না।

সিপিডির আরেক সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেকে পোশাক খাতের বাইরের কিছু খাত নিয়ে চিন্তা করছেন। পোশাক খাতের নির্ভরশীলতা থেকে বের হতে চাচ্ছেন। তবে বিদ্যমান অবকাঠামোতেই এ খাতে আরও ভালো করা যায়। আরও বৈচিত্র্য আনা যায়।

বিআইডিএস-এর মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন বলেন, কোভিডের আগে নগর দারিদ্র্য ছিল ৯ দশমিক ৫ শতাংশ। প্রথম লকডাউনে এটা বেড়ে দাঁড়ায় ৪২ শতাংশ, দ্বিতীয় লকডাউনে কমে দাঁড়ায় ৩২ শতাংশ, ওমিক্রনের সময় এটা আরও কমে নামে ২১ শতাংশে। বর্তমানে করোনার সেই শঙ্কা নেই। নগর দারিদ্র্য এখন কমে হয়েছে ১৬ শতাংশ।

অনুষ্ঠানে মতামত তুলে ধরেন গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান প্রমুখ।

Advertisement

এমওএস/এমকেআর/এএসএম