চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগার ৪২ ঘণ্টা পার হলেও তা নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এখনো বেশ কয়েকটি কনটেইনার দাউ দাউ করে জ্বলছে। তবে কেমিক্যালযুক্ত কনটেইনারগুলো আগুনের কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ধোঁয়া বেরোচ্ছে কয়েকটি কনটেইনার থেকে।
Advertisement
ফায়ার সার্ভিস বলছে, টানা ৪২ ঘণ্টা ধরে কাজ করতে করতে বেশ কয়েকজন দমকলকর্মী ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। ডিউটি ভাগ করে দেওয়ার পরও আগুনের মাত্রা অতিরিক্ত থাকায় দমকলকর্মীরা ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন।
সোমবার (৬ জুন) সরেজমিনে দেখা যায়, ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি বড় ইউনিট এখন আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। চারটি কেমিক্যালযুক্ত কনটেইনার সরিয়ে নেওয়া হয়েছে নিরাপদ স্থানে। তবে সেই কনটেইনারগুলো সরিয়ে নিলেও ফায়ার সার্ভিস বলছে সেগুলোতে বিস্ফোরণের আশঙ্কা রয়েছে। মূল আগুন নিয়ন্ত্রণের পর কেমিক্যালযুক্ত এই কনটেইনার নিয়ে কাজ করবে ফায়ার সার্ভিসের বিশেষজ্ঞ ইউনিট।
দীর্ঘক্ষণ ধরে কাজ করা ফায়ার সার্ভিসের কর্মী আবুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, এখনো আগুনের যে মাত্রা তাতে কাজ করতে বেগ পেতে হচ্ছে। আমাদের কয়েকজন সদস্য ক্লান্ত হয়েছেন আগুনের অতিরিক্ত তাপে। কিছুক্ষণ পর পর বিশ্রাম নিয়ে আবারও তারা কাজে যোগ দিচ্ছেন।
Advertisement
বৃহত্তর কুমিল্লা ফায়ার স্টেশনের সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, আগুন যেখানে জ্বলছে সেখানে কাপড়ের স্তূপ রয়েছে। এ কারণে কাপড়ের আগুন না নেভানো পর্যন্ত ডিপোর সম্পূর্ণ আগুন নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
সম্পূর্ণ আগুন নিয়ন্ত্রণ করা গেলে মরদেহ আরও উদ্ধার হবে কি না, জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, এখনো যে তাপ তাতে ভেতরে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। তাপ কমলে হয়তো আগামীকাল ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যাবে সেখানে আরও মরদেহ আছে কি না।
শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। আগুন লাগার পর রাসায়নিকের কনটেইনারে একের পর এক বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটতে থাকলে বহু দূর পর্যন্ত কেঁপে ওঠে। অগ্নিকাণ্ড ও ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯ জন হয়েছে।
তবে জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে মৃতের সংখ্যা ৪৬। দগ্ধ ও আহত ১৬৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাতেই শনাক্ত হওয়া নিহতদের জেলা প্রশাসনের সহায়তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
Advertisement
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াস হোসেন চৌধুরী জানান, নিহতদের মধ্যে ডিপোর শ্রমিকদের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের ৯ সদস্যও রয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
টিটি/বিএ/এএসএম