জাতীয়

সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ কর্মীসহ নিহত ৩১

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুনের পর ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১ জন হয়েছে। এদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী রয়েছেন পাঁচজন।

Advertisement

এছাড়া আগুনে আহত হয়েছেন আরও চার শতাধিক। তাদের মধ্যে ডিপোর শ্রমিক, স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও রয়েছেন।

রোববার (৫ জুন) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) হাসপাতাল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

এদিকে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে আহতদের দেখতে আসেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর।

Advertisement

অপরদিকে অগ্নিদগ্ধদের কান্না-চিৎকারে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠেছে। রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। বার্ন ইউনিটের সামনে ভিড় করেছেন স্বজনরা। তাদের উৎকণ্ঠা আর শঙ্কায় কাটছে সময়।

ভয়াবহ এই পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামের সব চিকিৎসকের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদেরও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সরকারি হাসপাতালগুলোতে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন।

এছাড়া চট্টগ্রাম মেডিকেল ছাড়াও নগরীর অন্যান্য হাসপাতাল এবং কম্বাইন্ড মিলিটারি হাসপাতালেও (সিএমএইচ) দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা।

পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আগুনের লেলিহান শিখা এক কনটেইনার থেকে অন্য কনটেইনারে ছড়িয়ে পড়ে। একটি কনটেইনারে রাসায়নিক থাকায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থল থেকে কেঁপে ওঠে অন্তত চার কিলোমিটার এলাকা। আশপাশের বাড়িঘরের জানালার কাচ ভেঙে পড়ে।

Advertisement

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানিয়েছেন, শনিবার রাতে আগুন লাগার পর কনটেইনারের সামনে সরাসরি পানির পাইপ ধরে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা হতাহত হন।

আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করা ফায়ার ফাইটার রাবিক হাসান জাগো নিউজকে বলেন, গতকাল (শনিবার) রাত থেকে টানা কাজ করছি। কোনোভাবেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না।

বিএম কন্টেইনার ডিপোর পরিচালক মুজিবুর রহমান বলেন, ডিপো ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িতদের অনেকেই আহত থাকায় সঠিক কী কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে কন্টেইনার থেকেই আগুন ধরেছে বলে ধারণা করছি।

তিনি আরও বলেন, আহতরা যাতে সর্বোচ্চ চিকিৎসা পায় সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে। চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বহন করবো আমরা। এ দুর্ঘটনায় যারাই হতাহত হয়েছে তাদের সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। পাশাপাশি সব হতাহতের পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া হবে।

এসময় তিনি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সবাইকে পাশে থাকার আহ্বান জানান।

ইকবাল হোসেন/জেডএইচ/এমএস