অযত্নে জন্মানো ল্যান্টানা নামের ফুল গাছ গাজীপুরের কালিগঞ্জে পথের ধারে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে। এর আদি নিবাস আমেরিকায়। বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এটি দেখা যায়। পথেঘাটে ফুটলেও অনেকেই জানেন না এই ভেষজ গাছটির নাম।
Advertisement
পথের ধারে আগাছা হিসেবে জন্মানো এই ল্যান্টানা গাছের সৌন্দর্য এখন সবার নজর কাড়ছে। প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা এই গাছ ভেষজ উদ্ভিদ ও শোভাবর্ধকারী হিসেবেই পরিচিত।
বর্তমানে ল্যান্টানা বাগান সাজানোর জন্যও রোপণ করা হচ্ছে। এটি ক্রান্তীয় মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকাসহ পৃথিবীর ৫০টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ইউরোপে ওলন্দাজরা প্রথম ল্যান্টানা চাষ করেছেন বলে জানা যায়। পরে এটি এশিয়া ও ওশেনিয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। জানা যায়, এই ফুল গাছটি পর্তুগিজরা প্রথম এ দেশে নিয়ে আসেন। এই ফুলের ছত্রমঞ্জুরী দেখতে খুব সুন্দর।
ভারতের এক গবেষণায় জানা গেছে, ল্যান্টানার পাতায় অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, ছত্রাকনাশক এবং কীটনাশক গুণাগুণ রয়েছে। ল্যান্টানা ক্যান্সার, ত্বকের চুলকানি, কুষ্ঠরোগ, চিকেন পক্স, হাম, হাঁপানি, আলসারসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার জন্য ভেষজ ওষুধে ব্যবহার করা হচ্ছে। এ গাছের নির্যাস ব্রাজিলে শ্বাসতন্ত্র সংক্রমণের চিকিৎসার জন্যও ব্যবহার করা হচ্ছে।
Advertisement
ল্যান্টানা খুব সহজেই জন্মায় এবং অল্প পরিচর্যায় বেঁচে থাকতে পারে। এ কারণে ডাচ অভিযাত্রীরা এটি প্রথম ইউরোপে নিয়ে এসেছিল শোভাবর্ধক উদ্ভিদ হিসেবে। পরে ল্যান্টানা ঔষধি ও শোভাবর্ধনকারী হিসেবে পরিচিত লাভ করে। অনেক প্রজাপতি ল্যান্টানা ফুলের মধু পান করে।
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার হা-মীম গ্রুপের ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের (সাবেক মসলিন কটন মিলস) শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে এবং কালীগঞ্জ-ঘোড়াশাল বাইপাস সড়ক, বোয়ালী-বর্তুল সড়ক, কালীগঞ্জ-পানজোরা সড়ক ও কালীগঞ্জ-টঙ্গী সড়কে প্রচুর পরিমাণে ল্যান্টানা জন্মেছে। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন শাখা রাস্তাগুলোর পাশে দেখা যায়। অযত্ন আর অবহেলায় বেড়ে উঠা উদ্ভিদটি সবার সৃষ্টিতে পড়ে না। যারা আসলে প্রকৃতিপ্রেমী তারা এই অবহেলিত জিনিসের সৌন্দর্য খুঁজে বেড়ায়।
ল্যান্টানা নিয়ে কথা হয় স্থানীয় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কর্মরত ফোরকানুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি জানান, আমরা বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ঘুরতে গেলে রাস্তার ধারে প্রায়শই এই ফুল দেখতে পাই। তবে সাধারণত এর সৌন্দর্য্টাই আমরা উপভোগ করি। কিন্তু এর ঔষধি গুণাগুণ সম্পর্কে জানি না।
অটোরিকশা চালক মো. আরিফ মিয়া জানান, ইজিবাইক চালানোর সুবাদে স্থানীয়ভাবে বিভিন্নস্থানে ঘোরাঘুরির সুযোগ হয়। তখন রাস্তার ধারে এই ফুল ফুটে থাকতে দেখি। নাম জানা না থাকলেও এই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করি। তবে এলাকার বা স্থানীয় মুরব্বিদের কাছে জানতে পারি এটা ল্যান্টানা ফুল। শুনেছি এর ঔষধি গুণাগুণও আছে বেশ।
Advertisement
কালীগঞ্জ বাজারের জুতা ব্যবসায়ী সুজন মিয়া জানান, এই ফুল রাস্তার ধারে ফুটে আছে দেখি। কেউ কোনো যত্ন নেয় না। অবহেলা আর অনাদরে বেড়ে উঠা ঔষধি গাছ এটি। তবে ল্যান্টার রূপ সৌন্দর্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে।
আব্দুর রহমান আরমান/এমএমএফ/এএসএম