গণসংহতি আন্দোলনের সঙ্গে ‘যুগপৎ ধারায়’ আন্দোলনে বিএনপি একমত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
Advertisement
মঙ্গলবার (৩১ মে) দুপুরে রাজধানীর হাতিরপুলে গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দুই ঘণ্টার রাজনৈতিক সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের কাছে এই কথা জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণআন্দোলন ও রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা একমত হয়েছি। আমরা একমত হয়েছি যুগপৎ আন্দোলনের ব্যাপারে।
তিনি আরও বলেন, আমরা একমত হয়েছি যে, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। বাতিল করতে হবে সংসদ। এরপর একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে হবে। তাদের অধীনে নির্বাচন কমিশন গঠন হবে, তাদের মাধ্যমে নির্বাচন হবে।
Advertisement
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের আলোচনায় মৌলিক কোনো মতভেদ দেখিনি। তবে নির্বাচনকালীন সরকারের নামের বিষয়ে মত ভিন্নতা থাকতে পারে। অন্তর্বর্তীকালীন না নিরপেক্ষ সরকার। এটা নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। আমরা আলোচনার মাধ্যমে এই বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারবো।
গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংলাপে মির্জা ফখরুল
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, বর্তমান সরকারের পতনের জন্য আন্দোলন দরকার। এইভাবে যদি একটা জাতীয় রূপরেখা আজকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে থেকে হাজির হয়, জনগণ নতুন করে আন্দোলিত হবে। একটা বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলে বর্তমান সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে পারবো। সেজন্য আমরা প্রাথমিকভাবে, যুগপৎ ধারায় আন্দোলন যার যার অবস্থান থেকে পরিচালনা করতে ঐক্যমত হয়েছি।
সরকার মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারাই ক্ষমতায় থাকে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে এবং দেশের মানুষ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। এ জন্য আমরা সংবিধান সংস্কারের সুনির্দিষ্ট কতগুলো প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা মনে করি, নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ আলাদা করতে হবে, নিম্ন আদালতকে উচ্চ আদালতের অধীনস্থ করতে হবে সব দিক থেকে, তার নিয়োগ-বদলি ও পদোন্নতিসহ। উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি করতে হবে এবং জ্যেষ্ঠতার লঙ্ঘন করা যাবে না।
Advertisement
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক বলেন, আমরা সাতটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেছি। ৭০ অনুচ্ছেদের সংস্কার, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা, সব সাংবিধানিক পদে সাংবিধানিক কমিশনের মধ্য দিয়ে নিয়োগ, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য, নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ গঠন সংসদে, প্রদেশ ব্যবস্থা সামনে নিয়ে আসা এবং সব অগণতান্ত্রিক আইন বাতিল করা, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট কিংবা আরপিও এই সব আইন, যেগুলো জনগণের ওপর নিপীড়নকারী সেগুলো বাতিল করার কথা বলেছি।
গণসংহতি আন্দোলনের কার্যালয়ে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুক ও সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন।
এদিকে জোনায়েদ সাকির নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদল আলোচনায় অংশ নেন। অন্যরা হলেন নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতার, মুনির উদ্দিন পাপ্পু, হাসান মারুফ রুমি, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য ইমরাদ জুলকারনাঈন, বাচ্চু ভুঁইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, দীপক রায়, কেন্দ্রীয় সদস্য মিজানুর রহমান, আলিফ দেওয়ান।
কেএইচ/জেডএইচ/এএসএম