পেশিতে টান ধরার সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। কখনো ঘুমের মধ্যে কিংবা কখনো হাঁটতে গিয়ে বা আড়মোড়া ভাঙতে গিয়ে হঠাৎই পেশি শক্ত হয়ে টান ধরার ঘটনা ঘটে। এক্ষেত্রে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হয়।
Advertisement
শরীরের যে অংশের পেশিতে টান ধরে, তা সোজা করাই মুশকিল হয়ে পড়ে। কখনো কখনো এই পেশির টান ধরার সমস্যা আপনাআপনিই মিটে যায় আবার কখনো কখনো তা ভোগায়। তবে কেন এমনটি হয়?
চিকিৎসকদের মতে, টোকোফেরল, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই, ভিটামিন এ’র অভাব, পটাশিয়ামের স্বল্পতা পেশিতে টান ধরার কারণ হতে পারে। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে বেড়ে ওঠার সময়ও এমন লক্ষণ দেখা যায়। কোনো কোনো শিশুর হাড়ের সঙ্গে পেশির বৃদ্ধি সমতা বজায় থাকে না। ফলে পেশিতে টান ধরার ঘটনা ঘটে।
শরীরের ঐচ্ছিক পেশির সহায়তায় আমরা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নাড়াচাড়া করে বিভিন্ন কাজ করে থাকি। এই পেশিগুলো সাধারণত সঙ্কুচিত বা প্রসারিত হয়। কখনো কখনো পেশিগুলো দীর্ঘসময় সঙ্কুচিত হয়ে থাকে। ফলে প্রসারিত হতে পারে না। এ কারণেই হঠাৎ পেশিতে টান ধরার ঘটনা ঘটে।
Advertisement
আবার যারা ক্রনিক কোনও রোগে ভুগছেন বা আঘাতজনিত সমস্যা আছে, তাদের পেশিতে টান লাগা স্বাভাবিক। তবে যাদের এই সমস্যা নেই তাদের ক্ষেত্রে কয়েকটি কারণে পেশিতে টান লাগতে পারে। জেনে নিন কী কী কারণে পেশিতে টান ধরতে পারে-
>> পেশিতে ল্যাকটিক অ্যাসিড অধিক মাত্রায় জমা হলে তা পেশিকে সঙ্কুচিত করে রাখে ও প্রসারিত হতে দেয় না। ফলে টান ধরে পেশিতে।
>> গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলার শরীরে খনিজ পদার্থের ঘাটতি দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে বার বার পেশিতে টান ধরে। এমনটা প্রায়ই ঘটলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
>> আমাদের শরীরের ৯০ শতাংশই পানি। শরীরে তরলের পরিমাণ যখন সঠিক থাকে অঙ্গগুলোও ঠিকমতো কাজ করে। আর পানির ভারসাম্য নষ্ট হলেই পেশিতে টান ধরার সমস্যা দেখা যায়।
Advertisement
>> সুস্থ থাকতে যেমন- পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়ামের মতো বিভিন্ন খনিজ পদার্থের প্রয়োজন, তেমনই বি-৬, বি-১২, সি’র মতো বিভিন্ন ভিটামিনের চাহিদা আছে শরীরের।
শারীরবৃত্তীয় কারণে যদি শরীরে ভিটামিন বা মিনারেলের তারতম্য হয় তবে পেশিতে টান লাগতে পারে। তাই খেয়াল রাখতে হবে যে, শরীর সব ধরনের পুষ্টি উপাদান পাচ্ছে কি না।
পেশি ধরার সমস্যা প্রতিরোধের উপায়
>> পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। শরীরে যেন পানির ঘাটতি না হয় সেদিকে নজর রাখুন।
>> শরীরচর্চা করতে গিয়ে পেশিতে টান ধরলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন। এরপর ব্যথা কমলে শরীরচর্চায় ফিরুন।
>> খাদ্যতালিকায় রাখুন পুষ্টিকর সব খাবার। কলা, আমন্ড, দুগ্ধজাত দ্রব্য, গাজর, বিনস ইত্যাদি নিয়মিত খেতে হবে।
>> ভিটামিন এ, সি, ডি, ই ও পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার পেশির টান কমায়।
সূত্র: মায়োক্লিনিক
জেএমএস/জেআইএম