আন্তর্জাতিক

ব্যক্তিগত যানবাহনে তেল বিক্রিতে সীমা বেঁধে দিলো শ্রীলঙ্কা

চরম অর্থসংকটের মধ্যে জ্বালানির ব্যবহার কমাতে ব্যক্তিগত গাড়িতে তেল বিক্রির সীমা নির্ধারণ করে দিলো শ্রীলঙ্কা। মঙ্গলবার (২৪ মে) সিলন পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (সিপিসি) ও লঙ্কা আইওসির (এলআইওসি) পক্ষ থেকে এক ঘোষণায় মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকারের মতো যানবাহনগুলোতে তেল বিক্রির সীমা নির্ধারণের কথা জানানো হয়েছে।

Advertisement

নতুন নিয়ম অনুসারে, দ্বীপরাষ্ট্রটিতে প্রতিটি মোটরসাইকেলে সর্বোচ্চ আড়াই হাজার রুপি, থ্রি-হুইলারে তিন হাজার রুপি এবং প্রাইভেটকার, ভ্যান ও জিপ গাড়িতে সর্বোচ্চ ১০ হাজার রুপির তেল বিক্রি করা যাবে। তবে বাস, লরি ও অন্যান্য বাণিজ্যিক পরিবহনের ক্ষেত্রে তেল বিক্রির কোনো সীমা নির্ধারিত নেই। দেশটিতে এর আগে গত ১৫ এপ্রিল ও ৫ মে অস্থায়ীভাবে তেল বিক্রি সীমাবদ্ধ করা হয়েছিল।

এদিকে, শ্রীলঙ্কায় মঙ্গলবার থেকে আবারও বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। গত দেড় মাসে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ালো দেশটি।

জানা গেছে, শ্রীলঙ্কায় পেট্রলের দাম একলাফে ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ডিজেলের দাম ৩৮ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছে নতুন মন্ত্রিসভা। সেখানে এখন এক লিটার পেট্রল কিনতে লাগছে ৪২০ রুপি (১০৩ টাকা প্রায়) এবং ডিজেলে ৪০০ রুপি (৯৮ টাকা প্রায়)। দেশটিতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর বেড়েছে বাসভাড়াও।

Advertisement

নতুন নির্দেশনা অনুসারে, শ্রীলঙ্কায় এক লিটার পেট্রলের (৯২ অকটেন) দাম বাড়ানো হয়েছে ৮২ রুপি (৩৩৮ রুপি থেকে হয়েছে ৪২০ রুপি)। অটো ডিজেলের দাম বেড়েছে লিটারপ্রতি ১১১ রুপি (২৮৯ রুপি টাকা থেকে ৪০০ রুপি) এবং সুপার ডিজেলের দাম বেড়েছে ১১৬ রুপি (৩২৯ রুপি থেকে ৪৪৫ রুপি)।

লঙ্কান বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রী কাঞ্চনা বিজেসেকেরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় ভোর ৩টা থেকে তেলের নতুন মূল্য কার্যকর হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, দেশটিতে জ্বালানির ব্যবহার কমাতে এবং বিদ্যুৎ সংকট নিয়ন্ত্রণে জনগণকে বাড়ি থেকে কাজ করতে উৎসাহিত করা হবে। সরকারি কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানপ্রধানের নির্দেশনা পেলেই কেবল অফিসে গিয়ে কাজ করবেন।

অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা, শ্রীলঙ্কায় তেলের দাম ও গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ায় খাদ্য ও পরিবহন খরচ আরও বেড়ে যাবে। দেশটিতে এমনিতেই গত এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি বেড়ে রেকর্ড ৩৩ দশমিক ৮ শতাংশে পৌঁছেছে। এক মাস আগেও সেখানে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ২১ দশমিক ৫ শতাংশ।

অর্থনীতির এমন নাজুক এমন পরিস্থিতির জন্য লঙ্কান সরকারের ওপর ক্ষোভ বাড়ছে মানুষের। গত সপ্তাহেও কলম্বোয় বিক্ষোভে নামা কয়েকশ শিক্ষার্থীর ওপর টিয়ারগ্যাস, জলকামান ব্যবহার করেছে পুলিশ। বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের পর তার ভাই গোতাবায়া রাজাপাকসেরও পদত্যাগ দাবি করছেন।

Advertisement

সূত্র: ডেইলি মিরর

কেএএ/এমএস