গত ৬ মাস থেকে রাজধানীর বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ করছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ও জঙ্গিবাদী তৎপরতারোধে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ঢাহা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তবে একটি ফরমেই তথ্য সংগ্রহ করা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়ারা।বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের অভিযোগ, হয়রানি ও অন্য কেসে নিজেদের ফেঁসে যাওয়ার ভয়েই মূলত তথ্য দিচ্ছেন তারা। তবে কোনটা ভাড়াটিয়ার আর কোনটা বাড়িওয়ালার তথ্য ফরম তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে তৈরি হয়েছে। এক্ষেত্রে থানা পুলিশের কাছ থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা পাচ্ছেন না বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়ারা।ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, জঙ্গি তৎপরতা ঠেকাতে এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঢাকায় বসবাসরত নাগরিকদের তথ্যভাণ্ডার তৈরি করছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এই তথ্যভাণ্ডারে ঢাকায় স্থায়ী এবং অস্থায়ীভাবে বাস করা ভূমির মালিক (বাড়িওয়ালা) এবং ভূমি ব্যবহারকারী (ভাড়াটিয়া) উভয়ের সকল তথ্য থাকবে। যাতে সহজেই যে কোনো প্রয়োজনে পুলিশের তথ্য পেতে সমস্যা না হয়। ঢাকার একাধিক থানা এলাকা ঘুরে জানা গেছে, বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহের জন্য আলাদা আলাদা ফরম তৈরি করেছে থানা পুলিশ। তবে বিশেষ পার্থক্য না থাকলেও একই ধরনের ভুল দেখা গেছে তথ্য ফরমে।পল্টন থানা থেকে তৈরি করা তথ্য ফরমে দেখা গেছে, বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহের জন্য আলাদা না করে একটি মাত্র ফরমে নেয়া হচ্ছে তথ্য। তথ্য ফরমের উপরে লেখা, ‘ভাড়াটিয়ার তথ্য ফরম’। উপরে ছবির ঘরেও চাওয়া হয়েছে ভাড়াটিয়ার ছবি। তবে নিচেই নামের ঘরে লেখা ‘বাড়িওয়ালা কিংবা ভাড়াটিয়ার নাম’। আবার সবশেষে স্বাক্ষরের ঘরে চাওয়া হয়েছে ভাড়াটিয়ার স্বাক্ষর। ফরমটির মাঝখানে পরিবার/মেসের সঙ্গী বা সদস্যদের বিবরণের ঘর মাত্র তিনটি। যাদের তিনের অধিক পরিবারের সদস্য কিংবা মেসের সঙ্গী তারা কিভাবে তথ্য ফরমটি পূরণ করবে সে বিষয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। মানিক নামে মালিবাগের এক ভাড়াটিয়া বলছেন, আমার পরিবারের সদস্য ৪ জন। ঘর ৩ জনের। বাকি একজনের তথ্য লেখার ঘর না থাকায় ফরমটি পূরণের ক্ষেত্রে দ্বিধায় পড়ি। আর সে কারণে গত তিন মাসেও ফরম জমা দেয়া হয়নি।চামেলীবাগের ভাড়াটিয়া আশরাফ আলী জানান, আমার পরিবারের সদস্য ৬ জন। কিন্তু বিবরণীর ঘর ৩ জনের। বাকি তিন জনের তথ্য বিবরণীর ঘর নেই। তাছাড়া উপরে নামের ঘরে ভাড়াটিয়া অথবা বাড়িওয়ালা লেখা হয়েছে। এ কারণে ক্রটিপূর্ণ মনে হয়েছে পল্টন থানা পুলিশের দেয়া ওই তথ্য ফরমটি। সে কারণে পূরণ করা হয়নি। তবে পল্টন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম জাগো নিউজকে বলেন, ফরমটি উভয়ই পূরণ করতে পারবে। তবে একটি পেইজেই তথ্য চাওয়ায় জায়গা সংকুলান না হওয়ায় এমনটি হয়েছে। এটা কোনো সমস্যা না। যাদের একাধিক সদস্য রয়েছে তারা একাধিক ফরমও পূরণ করে জমা দিতে পারেন। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা প্রধান ও মুখপাত্র যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ৫/৬ মাস আগে থেকে এই তথ্য ফরমে ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালাদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। ডিএমপি থেকে একটি ফরমেট দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন থানা বিভিন্নভাবে দিলেও লক্ষ্য একই তথ্য সংগ্রহ।তিনি বলেন, সকল তথ্য সংগ্রহের জন্য বাড়ি বাড়ি নিবন্ধন ফরম দিচ্ছে পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে বাড়িওয়ালাদের বলা হচ্ছে, সব তথ্য সংগ্রহ করেই যেন বাড়িভাড়া দেয়া হয়। এ পদক্ষেপের ফলে পূর্বের চেয়ে অপরাধের পরিমাণ কমে গেছে। ডাটাবেজের কারণে খুব সহজে অপরাধীদের ধরা সহজ হচ্ছে।জেইউ/এসকেডি/এআরএস/পিআর
Advertisement