দু’দিন আগে নিউইয়র্কের একজন নামকরা চিকিৎসককে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। তিনি মাউন্ট সাইনাই নামে একটি নামকরা হাসপাতালের বিশিষ্ট চিকিৎসক। শ্লীলতাহানির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দু’জন নারী মামলা দায়ের করার পর তাকে জেলহাজতে নেয়া হয়। তিনি এখন জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। তাকে আপাতত পেশাগত কাজ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। নিউইয়র্কের ডাক্তারদের পেশাগত সনদ প্রদানকারী সংস্থা তার তদন্ত শুরু করেছে। হাসপাতালও তদন্ত করছে। তদন্ত চলাকালীন তার মামলা বাতিলের জন্য কেউ দাবি করেননি। চিকিৎসকও তার পছন্দের আইনজীবী নিয়োগ করেছেন। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি নির্দোষ।এখানে তদন্ত চলবে নিরপেক্ষভাবে। চিকিৎসকদের সনদ প্রদানকারী পেশাগত সংস্থা একটি নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান। তাদের সদস্যরা কোন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের প্রভাবে এখানে স্থান পাননি। তদন্ত হবে নিরপেক্ষ ।নিউইয়র্কের চিকিৎসকদের অঙ্গ সংগঠন তার জন্য কোন বিবৃতি দেননি। বিচার চলাকালে কারো পক্ষে বিবৃতি দেবার প্রয়োজন নেই এখানে। আইনের শাসন বলে কথা। সংবাদ মাধ্যমগুলোও গুরুত্ব সহকারে এ খবর ছেপেছে। অতিরঞ্জন নেই কোথাও। তাকে আগাম দোষী বলা হয়নি কোথাও।আমি পাশাপাশি বাংলাদেশের চিকিৎসকদের ঘিরে কিছু ঘটনা অনুসরণ করছি। চট্টগ্রামে তিনজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ এসেছে। তাদের জানমালের ওপর হুমকির অভিযোগ এসেছে।চট্টগ্রামের বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) বেসরকারি সকল চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কর্মসূচি দিয়েছেন। সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত এবং জরুরি সেবা চলছে। বিএমডিসি বলে যে প্রতিষ্ঠানটি চিকিৎসকদের সনদপত্র প্রদান করেন তাদের কোন ভূমিকা কোন পত্রিকাতে দেখিনি। আমি যখন মেডিকেল কলেজের ছাত্র, তখন বিভিন্ন ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে সরকারি চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ হয়ে যেতো। এবার সেটা হয়নি। চিকিৎসকরা নিজেদের ব্যক্তিগত চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখছেন। নিঃসন্দেহে তারা আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছেন।বিএমএ’র নেতারা রাজনৈতিক দলের আশীর্বাদ নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এই পুরো ঘটনাগুলো কি রাজনৈতিকভাবে সমাধান করা যেতো? চিকিৎসকদের কি জন প্রতিনিধিদের সাথে মত বিনিময়ের রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে? চিকিৎসকরা কি জনসমর্থন বাড়ানোর কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না? চিকিৎসকরা কি বিএমডিসি’র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন না? ফৌজদারি আইনের নিতি নির্ধারকদের সাথে, পেশাজীবী অঙ্গ সংগঠকদের কি কোন আলোচনার পথ নেই?অনেক প্রশ্নই তো মাথাছাড়া উঠছে। কোনটা ছেড়ে কোনটা বলবো? শুধু এটুকু বুঝতে পারি, চিকিৎসকরা আর তাদের পরিপ্রেক্ষিত আলাদা কোন দ্বীপ নয় বাংলাদেশে। দেশের সামগ্রিক অবস্থার একটি ছোট্ট প্রতিফলন তারা।লেখক : ডা. বিএম আতিকুজ্জামান, পরিপাকতন্ত্র ও লিভার বিভাগীয় প্রধান, ফ্লোরিডা হাসপাতাল, ফ্যাকাল্টি, কলেজ অব মেডিসিন, সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা ইউনিভার্সিটিএআরএস/পিআর
Advertisement