যশোরে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রভার পড়েছে শিক্ষা উপকরণেও। হঠাৎ করেই বই, খাতা, কলমসহ স্টেশনারি সামগ্রীর দাম বেড়েছে।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা গেলো, বই ও খাতার মূল উপকরণ কাগজসহ সব ধরনের শিক্ষা উপকরণের দাম প্রায় দেড়গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আর ফটোকপি করা বইয়ের দাম বেড়েছে গড়ে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ। সমাজের উচ্চবিত্তের মাঝে প্রভাব প্রকট না হলেও শিক্ষা উপকরণের মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব নিম্ন আয়ের ক্রেতাদের মধ্যে পড়েছে।
যশোর শহরের কয়েকটি শিক্ষা উপকরণের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন ধরনের তৈরি খাতার দাম বেড়েছে প্রায় দেড়গুণ। সেই সঙ্গে বেড়েছে বইয়ের দামও। বিভিন্ন বিদেশি লেখকের মূল বই বাজারে আর পাওয়াই যাচ্ছে না। ফলে ফটোকপি বইয়ের দাম বেড়েছে গড়ে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ।
স্টেশনারি ও শিক্ষা উপকরণ বিক্রির দোকানগুলোতে ৪০ টাকার ব্যবহারিক খাতা এখন ৫০ টাকা, ৬০ টাকার খাতা ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৩০০ পৃষ্ঠার খাতা ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৬৫ টাকা, ১২০ পৃষ্ঠার খাতা ৩০ টাকা থেকে ৩৫ টাকা, কালার পেপার রিম ৩২০ থেকে বেড়ে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রেজিস্টার খাতা ৩০০ পৃষ্ঠা ১২০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা, ৫০০ পৃষ্ঠা ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
Advertisement
মিনি ফাইল প্রতিটি ১৫ টাকা থেকে বেড়ে ২০ টাকা। জিপার ফাইল ২৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা। কলমের দাম ডজনপ্রতি বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা। মার্কার পেন প্রতি পিস ২৫ টাকা থেকে বেড়ে ৩০ টাকা হয়েছে। সাধারণ ক্যালকুলেটর ৮০ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকা, ৯৯১ এক্স ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে বেড়ে ১ হাজার ৭০০ টাকা, ৯৯১ এক্স প্লাস ১ হাজার ৩৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা, ৯৯১ এমএস ৮৫০ টাকা থেকে বেড়ে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জ্যামিতি বক্স ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ১০০ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্লাস্টিক ও স্টিলের স্কেল ডজনপ্রতি ২০ টাকা থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। রাবার ডজনপ্রতি ১০ টাকা থেকে ২০ টাকা বেড়েছে।
ধর্মতলা মোড়ে ফটোকপি দোকানি আব্বাস আলী বলেন, কালি ও কাগজের দাম বেড়ে যাওয়ায় ফটোকপির দাম বেড়েছে। আগে প্রতি কপি ফটোকপি করতে এক টাকা নিতাম। তা এখন দেড় টাকা থেকে দুই টাকা নিতে হচ্ছে।
ফটোকপি দোকানে কথা হয় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন ও ফাহিম আহমেদের সঙ্গে। তারা জানান, পড়াশোনার জন্য বিভিন্ন বই ও নোট ফটোকপি করতে হয়। গত ১৫ দিনে ফটোকপি ব্যয়ও বেড়েছে।
Advertisement
মুসলিম একাডেমি স্কুল মার্কেট বুক কর্নারের স্বত্বাধিকারী এবং বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি যশোর জেলার সহ-সভাপতি সমীর কুণ্ডু বলেন, কাগজ ছাড়াও পুস্তক প্রকাশনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব উপকরণের দাম বেড়েছে। প্লেটের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। এছাড়া লেমিনেশনের দর দ্বিগুণ, সব ধরনের কেমিক্যালের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। এজন্য বইয়ের দাম বেড়েছে। যে প্রকাশনীর বই বাজারে একবার শেষ হচ্ছে, সেই বইয়ে দাম বেড়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির আরেক সহ-সভাপতি ও যশোর বুক সাপ্লাই লাইব্রেরির স্বত্বাধিকারী সরফরাজ হোসেন বলেন, দেড় মাস আগে প্রতি টন নিউজপ্রিন্ট কাগজের দাম ছিল ৪০ থেকে ৪২ হাজার টাকা। এখন তা ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে সময়ে সাদা কাগজের মূল্য ছিল প্রতি টন ৭০ থেকে ৭১ হাজার টাকা। এখন তা ৯৬ হাজার টাকার ওপরে কিনতে হচ্ছে। এই দামের প্রভাব বই এবং খাতার ওপরে পড়ছে।
মিলন রহমান/এমআরআর/এএসএম