আল্লাহ তাআলা মানুষের জন্য যা নিরাপদ করেন, তা রোধ কারো ক্ষমতা কারো নেই। আবার যাকে ধ্বংস করে দেন, তাকে রক্ষা করারও কেউ নেই। মহান আল্লাহ তার স্মরণকারীকে নিজ অনুগ্রহে বিপদ-আপদসহ সর্বাবস্থায় নিরাপত্তা দেন। এটি মহান রবের ওয়াদা। হাদিসের বর্ণনায়ও তা সুস্পষ্ট। আল্লাহ তাআলা বলেন- مَا یَفۡتَحِ اللّٰهُ لِلنَّاسِ مِنۡ رَّحۡمَۃٍ فَلَا مُمۡسِکَ لَهَا ۚ وَ مَا یُمۡسِکۡ ۙ فَلَا مُرۡسِلَ لَهٗ مِنۡۢ بَعۡدِهٖ ؕ وَ هُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ‘আল্লাহ মানুষের জন্য যে রহমত উন্মুক্ত করে দেন তা আটকে রাখার কেউ নেই। আর তিনি যা আটকে রাখেন, তারপর তা ছাড়াবার কেউ নেই। আর তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা ফাতির : আয়াত ২)
Advertisement
নিরাপত্তা পাওয়ার আমলসব কাজ আল্লাহর নামে শুরু করা। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দিকনির্দেশনাও এমন। যে কাজ আল্লাহর নাম নিয়ে করা হয়; আল্লাহ তাআলা সে কাজে নিরাপত্তা দান করে থাকেন। হাদিসে পাকে সুস্পষ্টভাবে এসেছে-হজরত জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহর নাম নিয়ে তোমার ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘুমাও। কারণ শয়তান (আল্লাহর নাম নিয়ে) বন্ধ করা দরজা খুলতে পারে না। (সুতরাং সব অনিষ্টতা থেকে নিরাপদ থাকতে) আল্লাহর নাম নিয়ে তোমার ঘরের আলো নিভিয়ে ঘুমাও। আল্লাহর নাম নিয়ে তোমার পাত্রগুলোর মুখ ঢেকে রাখো, যদিও একটি কাঁচ দ্বারা হয়। তা পাত্রের মুখ আড়াআড়িভাবে রেখে দাও। আল্লাহর নাম নিয়ে তোমার পান পাত্রের মুখ বন্ধ করে রাখো।’ (আবু দাউদ, বুখারি ও মুসলিম)
সব কিছু রক্ষার একচ্ছত্র অধিপতি তিনি। তার নামে কোনো কাজ করলে তা রোধ করার ক্ষমতা সৃষ্টির কারো নেই। উপরোল্লেখিত আয়াতের আলোকে নবি-রাসুলগণের দুনিয়ায় আসা ও আসমানি কিতাবগুলোর অবতারণও আল্লাহর এই সব করুণার অন্তর্ভূক্ত। সব কিছু মহান বস্তুর দাতাও তিনি এবং ফিরিয়ে নেওয়া বা নিবারণ করার মালিকও তিনি। তিনি ছাড়া না কেউ দাতা ও অনুগ্রহকারী আছে, আর না কেউ রোধকারী ও নিবারণকারী আছে। এ কারণেই নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর কাছে এভাবে দোয়া করতেন-اَللَّهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَউচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা লা মানিআ লিমা আত্বাইতা ওয়া লা মুত্বিয়া লিমা মানাতা’অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তুমি যা দান কর, তা রোধ করার এবং যা রোধ কর, তা দান করার সাধ্য কারো নেই।’ (বুখারী, মুসলিম)
অন্য একটি হাদিস দ্বারা আল্লাহর নিরাপত্তা পাওয়ার বিষয়টি সুস্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমাকে বলেন, ‘হে বৎস! জেনে রাখ, যদি দুনিয়ার সব জাতি তোমার কোনো উপকার করতে চায়। তবে সে আল্লাহ যা নির্ধারিত করে রেখেছেন এর বাইরে তোমার কোনো উপকার করতে পারবে না, পক্ষান্তরে যদি দুনিয়ার সমস্ত জাতি তোমার ক্ষতি করতে চায় তবে ততটুকুই ক্ষতি করতে পারবে যতটুকু আল্লাহ তোমার উপর লিখে রেখেছেন।’ (তিরমিজি)
Advertisement
সুতরাং সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখেই সব কাজ করতে হবে। আল্লাহর নামেই সব কাজ করতে হবে। তবেই তিনি সবাইকে দান করবেন নিরাপত্তা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়ার সব কাজ আল্লাহর নামে শুরু করার তাওফিক দান করুন। আল্লারহ কাছে নিরাপত্তা চাওয়ার তাওফিক দান করুন। আল্লাহই শ্রেষ্ঠ নিরাপত্তা দানকারী। আমিন।
এমএমএস/এমএস
Advertisement