জ্যৈষ্ঠকে মধুমাস বলা হয়। কারণ এমাসে প্রায় সব ধরনের মিষ্টি ও রসালো ফল পাওয়া যায়। নওগাঁর বাজারেও অন্যান্য ফলের সঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে মধুর মতো মিষ্টি ফল লিচু। গত দুই সপ্তাহ থেকে নওগাঁর বাজারে লিচু পাওয়া যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, স্থানীয়ভাবে লিচুর উৎপাদন খুবই কম। তবে এ মৌসুমে প্রায় দুই কোটি টাকার লিচু বিক্রি সম্ভবনা রয়েছে।
Advertisement
জেলা শহরের ডাবপট্টি ও কাঁচাবাজারের পাশে দেশীয় মৌসুমে ফলের সাতটি আড়ত রয়েছে। এসব আড়ত থেকে খুচরা ব্যবসায়ীরা লিচু কিনেন। এরপর শহরের বিভিন্ন স্থান বিশেষ করে,- ব্রিজ মোড়, তাজের মোড়, বাটার মোড়, কাঁচাবাজার, দয়ালের মোড় ও গোস্তহাটির মোড়ে স্থায়ী দোকানের পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা লিচু বিক্রি করছেন।
গত বছরের চেয়ে এবছর লিচুর দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় ক্রেতারা কিনতেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। বিক্রেতাদের সঙ্গে ক্রেতাদের বেশি দরদামও করতে হচ্ছে না। বাজারে এখন দিনাজপুরের বোম্বে ও স্থানীয় লিচু পাওয়া যাচ্ছে।
বোম্বে লিচু বিক্রি হচ্ছে ১০০ পিস ২২০-২৬০ টাকায় এবং দেশীয় জাতের (আঁটি) লিচু বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকায়। তবে চায়না-৩ জাতের লিচুর দেখা না মিললেও দোকানীরা বলছেন এটি বাজারে এলে এর ১০০ পিস বিক্রি হবে ৮০০-৯০০ টাকা। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বাজারে এ জাতের লিচুর সরবরাহ বাড়বে। সেই সঙ্গে দামও কমবে।
Advertisement
লিচুর ক্রেতা শাকিল হোসাইন বলেন, বাজারে কিছুদিন আগে যেসব লিচু পাওয়া গেছে সেগুলো টক ছিল। খেতে তেমন মজা পাওয়া যায়নি। এখন বোম্বে লিচু পাওয়া যাচ্ছে এবং দামও তুলনামূলক কম। তবে চায়না লিচু কিছুদিন পর পাওয়া যাবে। এ লিচুর আমদানি বেশি হলে দামও কমে যাবে। তখন আমাদের মতো ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দ্যে কিনে খেতে পারবেন। গত বছর বোম্বে লিচু বাজারে শুরুতেই ১০০ পিস ৩০০-৩৫০ টাকা কিনে খেতে হয়েছিল।
শহরের পার-বোয়ালিয়া গ্রামের মৌসুমী ফল বিক্রেতা নজরুল ইসলাম। শহরের নিটল ব্রিজের ওপর ভ্রাম্যমাণভাবে লিচু বিক্রি করেছেন। তিনি বলেন, গত ১৫ দিন থেকে বাজারে লিচু সরবরাহ বাড়ছে। বোম্বাই লিচু ১০০ পিসে বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৬০ টাকা। চায়না-৩ জাতের লিচু বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৯০০ টাকা। এছাড়া দেশীয় জাতের (আঁটি) লিচু বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা। বাজারে চায়না-৩ জাতের লিচুর চাহিদা ব্যাপক। তবে দামও একটু চড়া। বেশি বিক্রি হচ্ছে বোম্বাই জাতের লিচু।
নওগাঁ দেশীয় মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও মেসার্স মিলন এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, এ জেলায় স্থানীয়ভাবে লিচুর উৎপাদন খুবই কম। স্থানীয় লিচু আগেই বিক্রি হয়েছে। তবে দিনাজপুর, নাটোরের গুরুদাসপুর ও নাজিরপুর এবং রাজশাহী জেলা থেকে লিচু এনে চাহিদা পূরণ করা হয়।
জেলা শহরে সাতটি মৌসুমী দেশীয় ফল ব্যবসার প্রতিষ্ঠান আছে। এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীরা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় লিচু সরবরাহ করে থাকেন। এ মৌসুমে (একমাসে) প্রায় দুই কোটি টাকার লিচু বিক্রির সম্ভবনা রয়েছে।
Advertisement
আব্বাস আলী/এমএমএফ/এমএস