ঠাকুরগাঁওয়ে মাঘের শুরুতে শীতের তীব্রতা কিছুটা কম থাকলেও গত দু’দিনে আবারও শীত জেঁকে বসেছে। প্রচণ্ড শীতের কারণে ঠাকুরগাঁওয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শীতে সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে ছিন্নমূল মানুষ ও শিশুরা। এছাড়া শীতের তীব্রতা আরো কয়েকদিন একই অবস্থায় থাকলে শীতজনিত রোগের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।তীব্র কুয়াশার কারণে ভোরে জেলার বিভিন্ন সড়কে যানবাহন বাতি জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। কুয়াশার পাশাপাশি উত্তরের কনকনে হাওয়া শীতের তীব্রতা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। তীব্র শীতের কারণে গ্রামাঞ্চলের ছিন্নমূল মানুষ সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে। শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা আগুন জ্বালিয়ে শীত থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। শীতবস্ত্রের দামও বেড়ে গেছে। তবে বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন, ব্যবসায়ী, দানশীল ব্যক্তি কম্বল, শীতবস্ত্র বিতরণ করছে প্রতিদিন। ঠাকুরগাঁওয়ে আবহাওয়া অধিদফতর না থাকায় জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের কর্মকর্তারা জানায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর শীতের তীব্রতা একটু বেশি অনুভূত হচ্ছে। শীতের বর্তমান অবস্থা আরো কয়েকদিন বিরাজ করতে পারে। এ মাসের শেষে কয়েকটি শৈত্য প্রবাহ হতে পারে। জেলায় তাপমাত্রা আরো কমে যাওয়ার পাশাপাশি আগামী কয়েকদিন মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশার পরিমাণ আরো বেড়ে যেতে পারে। শীতের তীব্রতা ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে কমতে শুরু করবে।এদিকে শীত জেঁকে বসায় ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছে শিশু থেকে বিভিন্ন বয়সের লোকজন। বর্তমানে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছে। প্রতিদিন তাদের সংখ্যাও কিছুটা বাড়ছে বলে জানা গেছে। প্রতিদিন এই হাসপাতালের বহির্বিভাগে ঠান্ডাজনিত রোগে গড়ে প্রায় ৩০০ শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। যা সাধারণ সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। হাসপাতালে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঠান্ডাজনিত কারণে শিশুদের মধ্যে সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট (ব্রংকিউলাইটিস), গলাব্যথা, ব্রংকোনিউমোনিয়া, ফ্যারেনজাইটিস, অ্যালার্জি ইত্যাদি রোগ বেশি দেখা দিচ্ছে। চিকিৎসকরা আশঙ্কা করছেন শীতের তীব্রতা অব্যাহত থাকলে রোগীর সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে। এছাড়া শীতজনিত রোগের সঙ্গে পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়ার প্রকোপও দেখা দিচ্ছে।ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মূকেশ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, হঠাৎ শীতের তীব্রতা বেড়ে গেছে। সরকারের বরাদ্ধকৃত ইতোমধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। আরো কিছু চাহিদা পাঠানো হয়েছে।রবিউল এহসান রিপন/এসএস/পিআর
Advertisement