‘আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মতো সাহিত্যিক-সাংবাদিক আর কোনোদিন বাংলাদেশে আসবে না। তিনি সাংবাদিকতায় ছিলেন এক নম্বরে, কলাম লেখায় ছিলেন যেমন এক নম্বরে, তেমনি সাহিত্যিক হিসেবেও পঞ্চাশের দশকে ছিলেন প্রথম সারির একজন।’
Advertisement
সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মৃত্যুতে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে লেখক, গবেষক ও ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন এ মন্তব্য করেন।
ড. মামুন গভীর শোক প্রকাশ করে জাগো নিউজকে বলেন, ‘দীর্ঘ ষাট বছর কলাম লিখে তার মতো আর কেউ সমানতালে জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারেননি বাংলাদেশে। সম্ভবত, এটি পৃথিবীর ইতিহাসেও একটি বিরল ঘটনা। তিনি দেশে থাকলে আরও অনেক অনেক সৃষ্টি আমাদের উপহার দিতে পারতেন। প্রবাসে কষ্টসাধ্য জীবনযাপন করে তার পক্ষে সে উপহার দেওয়া আর সম্ভব হয়নি।’
গাফ্ফার চৌধুরীর বন্ধুসম এই ইতিহাসবিদ বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি গণ-আন্দোলনে গাফফার চৌধুরীর অগ্রণী ভূমিকা ছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ক্ষমতায় যাওয়ার বিষয়ে জনমত সৃষ্টিতে তিনি বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন। আমি গতকালই আলাপ করছিলাম, পৃথিবীতে একটি মাত্র গান লিখে যিনি অমর হয়েছেন, তিনি গাফফার চৌধুরী।
Advertisement
‘যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন যেমন বঙ্গবন্ধুর নাম থাকবে, তেমনি আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর নামও থাকবে। যতদিন আমাদের ভাষা আন্দোলনের কথা হবে, মুক্তিযুদ্ধের কথা হবে ততদিন গাফফার চৌধুরীরও কথা হবে। এই ভাগ্য নিয়ে বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু ছাড়া আর কেউ জন্মগ্রহণ করেননি।’
‘আমাদের ব্যক্তিগতভাবে কী হারালো তার বয়ান দিচ্ছি না। আমি তার অত্যন্ত স্নেহের একজন ছিলাম। ফোনে প্রায়ই কথা হতো। আমি শুধু বলবো, পঞ্চাশের দশকের একজন উজ্জ্বল লক্ষত্রকে হারালাম’- যোগ করেন মুনতাসীর মামুন।
গত দু’বছরে বেশ ক’জন গুণীজনকে হারাতে হলো। সৃষ্টিশীলতায় সংকট দেখেছেন কি না? জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি তা মনে করছি না। সেভাবে দেখলে হবে না। এরকম একেক দশকে অনেকেই জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু এক সময় সবাইকেই চলে যেতে হয়। তবে কোনো স্থানই অপূর্ণ থাকে না। গাফফার চৌধুরী আর ফিরে আসবেন না, কিন্তু তার জায়গা কেউ না কেউ দখল করে নেবে।’
এএসএস/এএসএ/জিকেএস
Advertisement